বলুনতো মানুষ কয় প্রকার?
প্রকার টকার নেই, চন্ডীদাস বলেছিলেন, “সবার উপরে মানুষ সত্য”। মহামতি মার্কস বলেছিলেন, দুই প্রকার — শোষক ও শোষিত। কিন্তু এসব আসলে ভুলভাল কথা। চন্ডীদাস আউটডেটেড, মার্কস বুলশিট। শোষক-শোষিত, আওয়ামীলীগ-বিএনপি, এমনকি ডান-বাম এইসব এখন চুকে-বুকে গেছে, “হার্মাদ’ কবি সোজা-সাপ্টা জানিয়ে দিয়েছেন, মানুষ আসলে দুই রকম — সুশীল ও হার্মাদ।
প্রকার টকার নেই, চন্ডীদাস বলেছিলেন, “সবার উপরে মানুষ সত্য”। মহামতি মার্কস বলেছিলেন, দুই প্রকার — শোষক ও শোষিত। কিন্তু এসব আসলে ভুলভাল কথা। চন্ডীদাস আউটডেটেড, মার্কস বুলশিট। শোষক-শোষিত, আওয়ামীলীগ-বিএনপি, এমনকি ডান-বাম এইসব এখন চুকে-বুকে গেছে, “হার্মাদ’ কবি সোজা-সাপ্টা জানিয়ে দিয়েছেন, মানুষ আসলে দুই রকম — সুশীল ও হার্মাদ।
সুশীল ও হার্মাদের মূল পার্থক্য কি? বিশদে বর্ণনা কর।
সিম্পল। হার্মাদরা ভালো এবং সুশীলরা খারাপ। ভারতের প্রখ্যাত এক কবি বলেছেন “সুশীলের চেয়ে হার্মাদরা নি:সন্দেহে ভালো’ (জয়দেব বসু, দৈনিক আজকাল, ২১ শে নভেম্বর)। ব্যস।
বিস্তারিত;
১। এতদিন যারা সরকারের অলিন্দে বিভিন্ন আবদার নিয়ে ঘুরঘুর করলেন এবং
২। রেডিও টেলিভিশনে যারা টকশো’র নামে গলাবাজি করছেন, তাঁরাই সুশীল।
২। রেডিও টেলিভিশনে যারা টকশো’র নামে গলাবাজি করছেন, তাঁরাই সুশীল।
এর থেকে একটা জিনিস স্পষ্ট বোঝা যায়, যে, আপনি যদি সরকারের বিভিন্ন অলিন্দে ঘুরে ঘুরে চটির শুকতলা ক্ষইয়ে ফেলেন, বৈদ্যুত সংযোগ, গ্যাস লাইনের সংযোগ বা ওয়াশার পানির লাইনের জন্য নেতা-হাফনেতা-মস্তান-কেরানি-অফিসার মিলিয়ে যদি মোট চৌদ্দ জনের কাছে আপনাকে ঘুরতে হয়, তার মানে হল আপনি “বিভিন্ন আবদার নিয়ে ঘুরঘুর করছেন’, এবং সেটা খুব খারাপ কাজ। আর দিনের পর দিন সেই কাজ করতে করতে দৈবাৎ যদি রেগে গিয়ে একদিন মিছিল করে ফেলেন, তবে আপনি নি:সন্দেহে সুশীল। আর আপনার যদি যথাযথ কানেকশন থাকে (মানে লাইন-ঘাট থাকে আরকি), হাঁটাহাঁটি না করেই যদি কাজ উদ্ধার করতে পারেন, তবে আপনি হার্মাদ। এই সরকার আপনারই সরকার। এবং একেই ইংরিজিতে গণতন্ত্র বলে।
উন্নয়নের পথ কি?
ঐকমত্য। খুন করি, ডাকাতি করি, চুরি করি আমাদের সঙ্গে একমত থাকুন। সব কথায় একমত হোন। নয়তো চুপচাপ থাকুন। এখন স্পেশালাইজেশানের যুগ, যার-যার কাজ তিনি করুন, অন্যের ফিল্ডে নাক গলাবেন না। রাজনীতি করবেন রাজনীতিকরা, লুটেপুটে খাবে মস্তানরা, ব্যবসা করবেন ব্যবসায়ীরা, বুদ্ধিজীবীরা খামোখা এইসব ব্যাপারে নাক গলাবেন কেন? রবীন্দ্রনাথ কি কবিতা না লিখে বোম বেঁধেছেন, না আইনস্টাইন ফিজিক্স ছেড়ে ইজরায়েলের রাষ্ট্রপতি হয়েছেন? কোন এক শিল্পপতি বলেছিলেন, “বুদ্ধিজীবীদের তো হওয়ার কথা সক্রেটিসের মতো। যিনি দর্শনে মশগুল, চিন্তায় মশগুল। লাভ-ক্ষতির অঙ্ক কষতে বয়েই গেছে’। সমাজ-সচেতনতা? গণতান্ত্রিক অধিকার? জাস্ট চেপে যান। সরকার খুনিদেরকে ফাঁসির আসামীদের ছেড়ে দিচ্ছে। জেল থেকে বের করে মাঠে ছেড়ে দিচ্ছে। বসুন্ধরাকে কতইনা সুবিধে দিল। আরো কতো সুবিধা দিলো সামিট গ্রুপকে। দেবেনা কেন? … তাদেরকে দেবেনা তো কাকে দেবে? একমত হোন। প্রশ্ন-টশ্ন একদম নয়। এখন উন্নয়ন চলছে। কথা বলতে হলে একটি কথাই বলতে পারেন — “ইয়েস স্যার’। জল উঁচু? ইয়েস স্যার। জল নিচু? ইয়েস স্যার। মহানেতা একবার বলবেন গুন্ডারা কেউ গুন্ডা নয়, সব আকাশী পোশাকের পুলিশ-ইয়েস স্যার। পরদিন বলবেন, আমি কি জানি ওরা কারা? ইয়েস স্যার। খালেদার রাজনীতি ছেড়ে দেওয়া উচিত- ইয়েস স্যার। নানা ভুল বলে ফেলেছিলাম- ইয়েস স্যার।
ঋত্বিক বলেছিলেন ভাবা প্র্যাকটিস করুন। সেসব ভুলে যান। এখন মন দিয়ে ইয়েস স্যার বলা প্র্যাকটিস করুন। পারেন তো ভালো, আখেরে লাভ হবে। নইলে আপনি সুশীল, আরো যতি মাতামাতি করেন-আপনি রাজাকার। আপনার বিরুদ্ধে তীব্র রাজনৈতিক সংগ্রাম চালানো হবে।
রাজনৈতিক সংগ্রাম কি?
সোজা বাংলাঃ মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে। খুন করব, কিন্তু ডেডবডি পাওয়া যাবেনা। গুলি খাবেন সোজা সামনে থেকে, মরবেন এনকাউন্টারে। বর্তমানে মাঠে আছেন আমাদের চৌকশ চাপাতি বাহিনী। রাস্তায় বেরোবেন চাপাতির নীচে কিমা হয়ে যাবেন। বিচার চাইলে আপনি শিবির নাহয় সন্ত্রাসী। হাঃ হাঃ জীবদ্ধশায় শত চেষ্টা করে সন্ত্রাসী হতে ব্যার্থ হলেও মরে গিয়ে ঐ উপাধিটা কপালে জুটে যাবে।
আমাদের রাজনৈতিক সংগ্রাম চলছে চলবে।
No comments:
Post a Comment
আপনার মন্তব্য দিন