ভালোবেসেছি, ভালোবাসি, ভালোবাসব— কথাগুলো প্রকাশ করার জন্য যা প্রয়োজন, সব
করব। দুজন দুজনকে ভালো লাগার কথা বলে ফেলেছেন, একজনের ভালোবাসা ছুঁয়ে গেছে
আরেকজনের মন—এরপর প্রথমবারের এসেছে ভালোবাসা দিবস।যে দিনটিতে নিজের আবেগ,
ভালোবাসার প্রকাশটা ঘটাতে পারেন ইচ্ছেমতো।সারা দিনে একবার হলেও হাসি ফোটাতে
হবে প্রিয় মানুষটির মুখে। দুই দিন বাকি আর ভালোবাসা দিবসের। তাই কীভাবে
মনের মানুষের কাছে নিজের আবেগ তুলে ধরবেন, সেই পরিকল্পনাগুলো শেষ মুহূর্তে
আরেকবার ঝালিয়ে নিতে পারেন।শত হলেও একসঙ্গে প্রথম ভালোবাসা দিবস। বছরের ৩৬৪
দিন কী দোষ করল? এই এক দিনেই কি বোঝাতে হবে, আমি তোমায় ভালোবাসি। বছরের
প্রতিটি দিনই তো ভালোবাসার জন্য। তবে বিশেষ একটি দিন বিশেষভাবে পালন করলে
ক্ষতি কী! বরং প্রিয় মানুষটির মনে যত অনুযোগ আছে, আপনার বিরুদ্ধে সেগুলোকে
আলতো টোকায় সরিয়ে দেওয়ার জন্য এ দিনটিই মোক্ষম। তো কী করা যায় ভালোবাসা
দিবসে? তালিকার প্রথমেই আসবে উপহারের কথা। উপহার দিতেই হবে, তা নয়। প্রথম
ভালোবাসা দিবসে কিছু একটা দেওয়ার বাসনা হতেই পারে। এ ক্ষেত্রে মেয়েদের জন্য
ছোট পাথর বসানো রুপার লকেট কিংবা দুল হতে পারে আদর্শ উপহার, জানান আড়ং-এর
বিপণন বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তাসনিম হোসেন। ছেলেদের জন্য ওয়ালেট, বেল্ট
কিংবা স্যান্ডেল হতে পারে। ইন্ডিগোর ডিজাইন ডিরেক্টর শৈবাল সাহা জানান,
হাতে তৈরি ডায়েরি বেশ ভালো উপহার হতে পারে। দুজনার সুন্দর মুহূর্তগুলো
সেখানে আটকে রাখা যাবে। এ ছাড়া ছবির ফ্রেম, ব্যাগ, ফতুয়া, শার্ট,
সালোয়ার-কামিজ ও শাড়ি উপহার হিসেবে মন ভালো করে দেবে। আর ভালোবাবাসা দিবসের
শুভেচ্ছা জানাতে পাঠাতে পারেন বিশেষ এসএমএস। ১২ তারিখে ঢাকা থেকে
গোপালগঞ্জ যাচ্ছেন শাহরিয়ার আহমেদ (ছদ্মনাম)। উদ্দেশ্য, প্রিয় মানুষটির
সঙ্গে পুরো দিন কাটাবেন। দুজন দুজনকে ব্রিটিশ নামে ডাকেন। তিন বছর ধরে
চিনতেন একে অন্যকে। তিন মাস আগে ভালোবাসার কথা প্রকাশ করেন। ১৪ তারিখ সকালে
রেহানাকে (ছদ্মনাম) বাসার সামনে থেকে তুলবেন। এরপর সারা দিন টইটই করে
ঘুরবেন। মুঠোফোনে কথাগুলো বলার সময় শাহরিয়ারের আনন্দ ও উত্তেজনা বেশ
ভালোভাবেই বোঝা যাচ্ছিল। প্রেয়সীর জন্য সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছেন অনেক বই।
চমক নষ্ট হয়ে যাবে বলে তিনি নাম প্রকাশ করতে চাননি। মেহেদি (ছদ্মনাম) ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগে পড়ছেন। বাক্স ভর্তি করে দেওয়ার জন্য বেশ
কয়েক রকম উপহার কেনা হয়ে গেছে। ছোট টেডি বিয়ার, আয়না, গোলাপ ফুলের পাপড়ি,
হূদয় আকারের বেলুন, কার্ড ইত্যাদি। রাত ১২টার সময় কাছের এক বান্ধবীর
মাধ্যমে প্রিয়জনকে বেলুন এবং কিছু পুতুল দেবেন। রাতে শুভেচ্ছা জানাবেন না। এ
জন্য মৃদু ঝাড়ি খেতে হবে বটে, সেটা সারপ্রাইজেরই অংশ। দুপুরে একসঙ্গে
খাবেন। তারপর শুধুই ঘুরে বেড়াবেন। নিজেকে সুন্দর করে উপস্থাপন করার বিষয়টিও
এই দিনে অনেকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। শৈবাল সাহা বলেন, ‘ইউরোপে ভালোবাসা
দিবসে লাল রংটি বেশি চোখে পড়ে। বাংলাদেশে ভালোবাসা ও কষ্টের রং হিসেবে নীল
রংকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। ইন্ডিগোর পোশাকের মূল রং নীল। আমরা ভালোবাসা দিবস
উপলক্ষে তরুণ-তরুণীদের জন্য পোশাক তৈরি করেছি।’ প্রিয় মানুষটির পছন্দের রং
পরতে পারেন। এ দিনটিতে ঘুরে বেড়ানোর জন্য নিরাপদ স্থান বেছে নেওয়াটা
বুদ্ধিমানের কাজ হবে। যেহেতু প্রথম ভালোবাসা দিবস, শুধু দুজনে মিলেই
উদ্যাপন করুন। অকারণে ঝগড়া না করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। যেটুকু সময়
পাবেন, নিজেদের মতো করে সাজিয়ে নিন। পছন্দ করেন, এমন কোনো জায়গায় খেতে
পারেন। প্রিয় মানুষটি কোনো পরিকল্পনা না করলে আপনি করে ফেলুন। শত হলেও
প্রথম ভালোবাসা দিবস। সুন্দর কিছু মুহূর্তই স্মরণীয় করে রাখবে দিনটিকে।
No comments:
Post a Comment
আপনার মন্তব্য দিন