Pages

**আমাকে এত ভালবাসে **


একটা ছেলে প্রতিদিন রাস্তার
পাশে দাড়িয়ে থাকত আর এক
নজরে তাকিয়ে থেকে একটা মেয়েকে দেখতো।
কিন্তু মেয়েটা তাকে পাত্তা দিত না ।
একবছর পরে মেয়েটা হঠাত ছেলেটার

দিকে একবার তাকিয়ে তাকালো আর
দেখতে পেল চোখের
নিচে একটা কালো দাগ পরে গেছে । আর
চেহারায় একটা রোগা রোগা ভাব। ঐদিন
রাতে মেয়টার চোখে ঘুম
আসলো না সারারাত শুধু এই ভেবেছিল
যে ছেলেটা আমাকে এত
ভালবাসে যে চেহারায় রোগা ভাব
ধরে গেছে তবুও আমায়
ভূলতে পারছে না বারে বারে প্রতিদিন
ছুটে আসছে?
এ কি আমি সত্যি দেখছি নাকি কল্পনা?
যদি সত্যি হয় তবে কি করব এখন
আমি?
যে আমাকে এত
ভালবাসে তাকে কি করে কষ্ট দেব
আমি? তারপর মেয়টা রাতের ঘুম হারাম
করে ছেলেটাকে ভালবাসতে লাগলো ।
পরদিন মেয়েটা যখন
বুকভরা ভালবাসা নিয়ে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে তখন
ছেলেটার দিকে দূর থেকে তাকাতে লাগল
যখন ছেলেটা মেয়টার চোখের
দিকে তাকালো তখন
মেয়েটা মিস্টি একটা হাসি দিয়ে বুঝিয়ে দিল
আমি তোমায় ভালবাসি। কিন্তু
ছেলেটা একটুও হাসলো না বরং ছেলেটার
চোখ থেকে ঝর্নার
মতো পানি ঝড়তে লাগলো তখন
মেয়েটা ভাবল এ হয়তো সুখের
কান্না তাই
আবার চোখের ইশারায় বুঝিয়ে দিল
তোমাকে আমি আর কাঁদতে দেব না।
পরদিন মেয়েটা রাস্তা দিয়ে আসছে আর
দূর থেকে উঁকি দিয়ে ছেলেটাকে দেখার
চেষ্টা করছে কিন্তু দেখতে পেল না ।
তখন মেয়েটার খুব রাগ হলো ।
এভাবে আরো একদিন
কেটে গেল মেয়েটা অনেক কষ্ট
পেতে লাগল। ৩য় দিন
মেয়েটা রাস্তা দিয়ে আসছে আর সেই
যায়গায় তাকিয়ে আছে ছেলেটি আগের
মতো তার অপেক্ষায়
আছে কি না দেখতে। কিন্তু দেখতে পেল
না । তখন মেয়েটা সেই জায়গায়
গিয়ে দাড়ালো যেখানে দাড়িয়ে ছেলেটাতাকে দেখতো।
তখন একাকিত্ব মেয়েটার চোখে এক
বিন্দু অশ্রু
এনে দিল । গাল বেয়ে এক ফোটা চোখের
পানি টপ করে নিচে পড়লো তখন
মেয়েটা নিচের দিকে তাকিয়ে দেখল তার
একফোটা অশ্রুভেজা একটা কাগজ আর
তাতে যেন কিছু লেখা আছে।
তখন মেয়েটা চিঠিটা উঠিয়ে পড়তে লাগল
.
.
.
.
.
আমি তোমার ঠোটের
হাসি দেখে বুঝে গেছি তুমি আমায়
ভালবেসে ফেলেছো। আমি তোমার চোখের
ইশারায় বুঝে গেছি তুমি আর আমায়
কাঁদতে দেবে না।
সেদিনের কান্নাটা অনেক সুখের ছিল ,
যে তুমি আমায় এক মুহুর্তের
জন্যে হলেও মন উজার
করে ভালবেসেছো। আবার এই
ভেবে কেঁদেছি যে আমি তোমায় হাতের
কাছে পেয়েও ছুঁতে পারলাম না। কিন্তু
যে আমাকে এত ভালবাসে যে আমার
চোখের কান্না মুছে দিয়েছে তাকে ২
দিনের জন্য কিভাবে সারা জীবন কষ্ট
দেবো? তাই আর
২ দিনের জন্যে আর আমার
প্রতি তোমার আবেগ বাড়াতে আসিনি।
কারন তুমি আমাকে যত ভালবাসবে তত
কাঁদবে তাই চেয়েছি তোমার
কান্নাটা কমাতে। জানি সব শুনে প্রশ্ন
করবে কেন এত কথা বলছি?
তুমিই
বলো তুমি কি কাঁদতে না যদি শুনতে আমার
ক্যান্সার হয়েছে?
তুমি কি কাঁদতে না যদি আমায়
ভালবাসার ২ দিন
পরে তোমাকে ফেলে এই
দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতাম?
সত্যি তুমি অনেক দেরি করে ফেলেছ ।
ডাক্তার বলেছে তুমিই নাকি আমায়
আগলে ধরে রাখতে পারতে কোথাও
যেতে দিতে না। যদি আমায়
প্রথমে ভালবাসতে। সত্যি তুমি অনেক
দেরি করে ফেলেছ।কষ্ট
পেওনা হয়তো এপারে আমরা এক
হতে পারিনি। আমার
ভালবাসা নিয়ে বেঁচে থেকো তবে নিশ্চই
ওপারে দিয়ে আবার আমরা এক
হতে পারব।
ভালথেকো ।
ইতি
তোমার
আলো যাকে ছুতে গিয়ে হারিয়ে ফেলেছো।
[বিদ্রঃ প্রকৃত
ভালবাসাকে চিনতে কখনো দেরি করবেন
না]

**হৃদয় ছোঁয়া কিছু কথা **



ফোনে কথা হচ্ছে
ছেলে: হ্যালো কেমন আছো?
মেয়ে: এইতো ভাল , তুমি কেমন আছো ?
ছেলে: তুমি আজ কলেজে আসোনি কেন? অনেক মিস করেছি তোমায়।

মেয়ে: আমি ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম তাই আসতে পারিনি।
ছেলে: সত্যি? কেন? কি হয়েছে তোমার?
মেয়ে: তুমি চিন্তা করো না , আমার কিছু হয়নি।কয়েকটা টেস্ট করাতে গিয়েছিলাম।
ছেলে:ও আচ্ছা ।
মেয়ে: আমি তোমাকে একটা প্রশ্ন করি?
ছেলে: ঠিক আছে , করো ।
মেয়ে: তুমি আমাকে কতটা ভালবাসো?
ছেলে: তুমি জানো না? পৃথিবীর সবকিছু থেকে আমিতোমায় বেশি ভালবাসি
মেয়ে: হ্যা জানি।
ছেলে: তাহলে হঠাত্‍ করে জিজ্ঞেস করলে যে?
মেয়ে: *নিরবতা*
ছেলে: কোন সমস্যা হয়েছে?
মেয়ে:না ,কিছু না । উমম, তুমি আমায় কতটা কেয়ার করো?
ছেলে: আমি যদি পারতাম তাহলে এক নিঃশ্বাসে এই পৃথিবীটা তোমার হাতে তুলে দিতাম।
মেয়ে: তুমি পারতে?
ছেলে: অবশ্যই পারতাম। *চিন্তিত হয়ে বলল* সত্যি করে বলো তোমার কিছু হয়েছে?
মেয়ে: নাহ, সবকিছু ঠিক আছে।
ছেলে: সত্যি বলছ?
মেয়ে: হ্যা
ছেলে: আমিও তাই আশা করি।
মেয়ে: তুমি আমার জন্য মরতেও পারবে?
ছেলে: তোমার জন্য আমি যে কোন সময় মরতে রাজি আছি।
মেয়ে: সত্যি?
ছেলে: যে কোন সময়। এখন সিরিয়াসলি বলো তোমারকি হয়েছে?
মেয়েঃ কিছুই হয়নি, আমি ভাল আছি। তুমি ভাল আছো । আমরা ভাল আছি । সবাই এবং সবকিছু ঠিক আছে।
ছেলে: হুম
মেয়:আচ্ছা, এখন রাখতে হবে। কাল কলেজে দেখা হবে।
ছেলে: ওকে, বাই। আই লাভ ইউ
মেয়ে: আই লাভ ইউ টু। বাই
পরের দিন...
ছেলে: এই তুলিকে(প্রেমিকা -র নাম) দেখেছিস?
ছেলেটির বন্ধু: নাতো !
ছেলে: ওহ
ছেলেটির বন্ধু: ও তো গতকালকেও আসেনি!
ছেলে: আমি জানি । গতকাল রাতে ও ফোনে আমাকে অনেক উল্টা পাল্টা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছে।
ছেলেটির বন্ধু: মেয়েরা মাঝে মাঝে এমনটা করে থাকে।
ছেলে: হুম, কিন্তু ও এরকম না।
ছেলেটির বন্ধু: তোরে বলে কোন লাভ নাই।
ছেলে: আচ্ছা আমি যাই , কলেজ ছুটির পর কথা হবে।
ছেলেটির বন্ধু: আমাকেও যেতে হবে, বাই।
সেদিন রাতে.....
মেয়ে: হ্যালো?
ছেলে: তুমি আজো কলেজে আসো নি কেন?
মেয়ে: আজকেও আবার ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম।
ছেলে: তুমি কি অসুস্থ?
মেয়ে: আম্মু ডাকতেছে , এখন ফোন রাখি।
ছেলে: আমি অপেক্ষা করছি
মেয়ে: একটু সময় লাগতে পারে , আমি তোমাকে পরেফোন দিব।
ছেলে: আচ্ছা।
-অনেক দিন পর-
মেয়ে: *অশ্রুসজল চোখে* দেখো, আমি মনে করি আমাদের ব্রেক আপ করা উচিত।
ছেলে: কি?!
ছেলে: এটাই আমাদের জন্য সব থেকে ভাল হবে।
ছেলে: কেন?
মেয়ে: আই লাভ ইউ :'( (ফোন কেটে দিল)
ছেলেটি খুব কষ্ট পেল ।
মেয়েটি আরো তিন সপ্তাহ কলেজে আসলো না এবং কারো ফোন রিসিভ করলো না।
ছেলে: কিরে কি খবর?
ছেলেটির বন্ধুঃ কোন খবর নেই। আচ্ছা তুই কি কয়েকদিনের মধ্যে তুলির সাথে কথা বলেছিস?
ছেলেঃ না
ছেলেটির বন্ধু: তুই শুনিসনি?
ছেলে: কি শুনব?
ছেলেটির বন্ধু:কিভাবে বলবো তোকে! আমি বলতে পারব না …
ছেলে: দোস্ত প্লিজ বল!
ছেলেটির বন্ধু: এই নাম্বারে কল কর , জানতে পারবি। ০১৯১১৯৫.......
ছেলে: থ্যাংক ইউ দোস্ত
ছেলেটি ঐ নাম্বারে কল দিল....
একটি কন্ঠ: হ্যালো হাসপাতাল থেকে বলছি।
ছেলে: ওহ,আমি বোধহয় ভুল নাম্বারে ডায়েল করেছি। আমি আমার এক বন্ধুকে কল দিয়েছি।
*ছেলেটা সমস্ত তথ্য বলল*
নার্স: হ্যা , আপনি ঠিক জায়গায় ফোন দিয়েছেন , আপনি যাকে ফোন দিয়েছেন সে আমাদেরএকজন রোগী।
ছেলে: সত্যি? কেন? কি হয়েছে? ও এখন কেমন আছে?
নার্স: ওনার রুম নং ৬৪৬, সিট নং ৩
ছেলে: কি হয়েছে?!
নার্স: দয়া করে এখানে আসুন তাহলেই দেখতে পাবেন। গুডবাই
ছেলে: আচ্ছা আমি এক্ষুনি আসছি
ছেলেটি হাসপাতালে গিয়ে দেখল মেয়েটি বেডে শুয়ে আছে
ছেলে: কি হয়েছে তোমার?
মেয়ে: *নিরবতা*
ছেলে: প্লিজ কথা বলো !
মেয়ে: আমি....
ছেলে: তুমি কি?
মেয়ে: আমার ক্যান্সার হয়েছে,এখন আমাকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে বাচিয়ে রাখা হয়েছে।
ছেলে: *কান্নায় ভেঙে পড়ল*
মেয়ে: আজই হয়ত আমার বেচে থাকার মেয়াদ শেষ হবে
ছেলে: কেন?
মেয়ে: আমি তোমাকে বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারিনি।
ছেলে: তুমি আমাকে বলনি কেন?
মেয়ে: আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাইনি
ছেলে: তুমি আমাকে কষ্ট দিতে পারো না
মেয়ে: আমি শুধু দেখতে চেয়েছিলাম তোমাকে আমি যতটুকু অনুভব করি ততটুকু তুমিও করো কিনা!
ছেলে: কি দেখলে?
মেয়ে: আমি তোমাকে সবকিছুর থেকে বেশি ভালবাসি। আমি পারলে পুরো পৃথিবীটাকে তোমার রাজত্বে এনে দিতাম। আমি তোমার জন্য মরতেও পারি যে কোন সময়।
ছেল: *কান্না*
মেয়ে: দুঃখ পেও না । আমি তোমাকে ভালবাসি এবং সবসময় তোমার সাথেই থাকব।
ছেলে: তাহলে আমার সাথে ব্রেক আপ কেন করেছিলে?
নার্স: স্যার আপনার কথা বলার সময় শেষ , এবার যে যেতে হবে।
ছেলেটি চলে গেল এবং সেদিন রাতে মেয়েটি মারা গেল কিন্তু ছেলেটি জানে না মেয়েটি তাকে ঐ প্রশ্নগুলো করেছিল কারন শেষবারের মত মেয়েটি ঐ কথাগুলো শুনতে চেয়েছিল। ছেলেটির সাথে সে ব্রেক আপ করেছিল কারন মেয়েটি জানত সে আর মাত্র তিন সপ্তাহ বাচবে , এই সময়ে মধ্যে ছেলেটি তাকে কিছুটা হলেও ভুলতে পারবে এবং কম কষ্ট পাবে।
পর দিন..
ছেলে আত্মহত্যা করল এবং সে একটি চিরকুট লিখে রেখে যায়। তাতে লেখা ছিলঃ
"আমি তোমাকে সবকিছুর থেকে বেশি ভালবাসি । আমিপারলে এই পৃথিবীটা তোমার হাতের মুঠোয় এনে দিতাম । আমি তোমার জন্য যে কোন সময় মরতে পারি।"♥ ♥

**কখনোই সেই মেয়ে/ছেলে কে কষ্ট দিবেন না যে**



♡♡ শুধু আপনার সাথে দেখা করার জন্য মাইলের পর মাইল হেটে আসে,
♡♡ সে “sorry” বলে যদি ও সে কিছুই করে নি ,
♡♡ সে অনেক কাঁদে আপনার জন্য ,

♡♡ সে আপনার জন্য এখন ও চিন্তা করে, এবং এখন ও ভালোবাসে ,
♡♡ সে এখন ও আপনাকে ফেরত পাবার বিশ্বাস রাখে ,
♡♡ সে যতই কষ্ট আপনার নিকট থেকে পাক আপনাকে তবুও ভালোবাসে ,
♡♡ সে সঠিক হয়া সত্ত্বেও তর্ক করা বন্ধ করে দেয় শুধু মাত্র রিলেশনটা যেনো নষ্ট না হয় ,
♡♡ সে অনবরত আপনাকে খুশী করার চেষ্টা করে এবং আপনাকে সুখী দেখতে চায় ,
♡♡ সে মন খারাপ করে থাকলেও বলে না, কারন সে ভাবে আপনাকে সে বিরক্ত করছে
♡♡ সে আপনাকে ছেড়ে যেতে চায় আপনার খারাপ ব্যাবহার এর জন্য , কিন্তু আফসোস তা সে পারে না

হয়তো আপনি অনুভব ও করতে পারবেন না সে আপনাকে কতটা ভালোবাসে,
একটা অনুরোধ রইলো সবার প্রতি, ভালোবাসার প্রতিদান না দেন ঠিক আছে , তবে কষ্ট দিবেন না।

♥একটা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার পন্থা সমূহঃ♥



১। একে অপরকে ভালবাসতে হবে ।
২। মিথ্যা কথা না বলা ।
৩। সব সময় যোগাযোগ রক্ষা করা ।
৪। সব সময় ভাল থাকা ।
৫। যখন তার কাছ থেকে অবহেলা পাবেন , ওইটাকে ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করবেন ।
৬। কখনোই সম্পর্ক ভেঙ্গে যায় এমন কোন কথা বলবেন না ।
৭। কোন জিনিস ঠিক না থাকা সত্ত্বেও ঠিক আছে এইটা বলবেন না ।
৮। আপনার অহংকার তার জন্যে বিসর্জন দেন । কখনোই প্রকাশ করবেন না ।
৯। আপনি যদি সরি বলেন তাহলে সে সেটা বুঝতে পারবে ।
১০। কখনোই আপনার অতীত কে বর্তমানের সাথে তুলনা করবেন না ।
১১। কখনোই আপনার অতীতের বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ড সম্পর্কিত কোন কথা তাকে বলবেন না সম্পর্ক থাকা অবস্থায় ।
১২। দেওয়া এবং নেওয়ার অভ্যাস করুন ।
১৩। আপনার সেই মানুষটির ব্যাপারে সব সময় অবগত থাকুন ।
১৪। যখন একে অপরের সাথে ঝগড়া হয় তখন যত দ্রুত সম্ভব টা মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে ।
১৫। যদিও কোন ব্যক্তিই সর্ব গুনে গুণান্বিত নয় , তবুও নিজেকে তার জন্যে যোগ্য মানুষ হিসেবে তৈরি করবেন ।

**পৃথিবীর বিখ্যাত ব্যাক্তিদের প্রেমিকাকে দেয়া গোপন প্রেমপত্র**

 একটা সময় ছিল প্রেমের অভিব্যাক্তি প্রকাশের একমাত্র হাতিয়ার ছিল প্রেমপত্র। ডিজিটাল যুগের প্রভাবে আমরা হারাতে বসেছি অনেক ভালোলাগা সেই অতিত জীবনের প্রেমের পদ্য প্রকাশের একমাত্র মাধ্যম প্রেমপত্র টিকে। এই পৃথিবীতে এমন মানুষ খুজে পাওয়া দুষ্কর যিনি বাড়ন্ত যৌবনে প্রেমে পরেন নি। আর সেই প্রেম প্রকাশের অফুরন্ত প্রচেষ্টা শেষমেশ কয়েকটি শব্দ ছটার দ্বারা লেখা প্রথম প্রেম পত্র।

কোনো এক কোকিল ডাকা সকালে আপনার  প্রিয় মানুষটি পকেটে একখানা কাগজ গুঁজে দিয়ে আড়চোখে আপনার দিকে চেয়ে মিটিমিটি হেসে বলে যে,  “একা একা পড়ো কিন্তু!”  দু’এক সেকেন্ডের জন্যে হলেও আপনার বুকের গহীন কোণে আনন্দের এক সমীরণ ঢেউ খেলে কি যাবে না?  জানালায় বাইরের দিকে দৈনন্দিন ব্যস্ত জীবনছবি দেখতে দেখতে মুহূর্তে হাতখানা কি নিশপিশ করবে না? কতক্ষণ পরে চিরকুটটি খুলে শব্দগুলোর মাঝে ঝড় তুলবেন?  কিংবা অফিসের কাজের মাঝে কোনো এক ছুতোয় চিরকুটখানা কি পড়তে একেবারেই মনে চাইবে না?  উহু!  বিশ্বাসযোগ্য নয়।  বরং  এর বিপরীতটা খুব কমই ঘটতে পারে বৈকি!
 ‘প্রেমপত্র’- শব্দটির সাথে আমরা সকলেই খুব পরিচিত।  প্রেমে পড়েননি এমন মানুষের সংখ্যা গোপনে বা প্রকাশ্যে হাতেগোনা বা নেই বললেই চলে।  প্রেম বিষয়টি ভাবগত।  এ প্রেমের ধরণ,  রকম-সকমেও রয়েছে গাঢ় রকমের ভিন্নতা।  আজকাল ফেসবুক মেসেঞ্জার, টুইটার, হোয়াটস অ্যাপ ইত্যাদি নানা আধুনিকতার ভিড়ে  প্রেমপত্র হারিয়ে গেলেও প্রেমপত্রের আবেদন কিন্তু একেবারেই হারিয়ে যায়নি।  দুরু দুরু বুকে কাঁপা কাঁপা হাতে লেখাগুলোই ধরে রাখত অনুভবের প্রথম অনুভূতি গুলোকে।  স্কুলফেরত রাস্তায়।
বিকেলের সোনালি পড়ন্ত আলোকে  সাক্ষী রেখে হাতে হাতে পৌঁছে যাওয়া সেসব প্রেমপত্র আজকের প্রজন্মের কাছে হয়তবা অচেনা। সময়ের দৌঁড়ে হয়তো  চিঠিপত্র লেখার সময় হয়ে ওঠে না,  তবুও যদি প্রিয় মানুষের জন্য সময় বের করে মনের না বলা কথাগুলো লিখেই ফেলেন,  তবে পত্রটি প্রিয় মানুষটির হাতে পড়তেই দেখবেন কেমন এক ম্যাজিক ঘটে যায়!  সময়স্রোতে ধীর বহমান একঘেয়ে জীবন মুহূর্তেই হয়ে উঠতেই পারে মারাত্মক চাঙ্গা!  প্রেমময় জীবন আবারো বয়ে যেতে পারে দ্বিগুণ,  তিনগুণ,  চতুর্গুণ বেগে,  ঠিক যেমনটি ছিল শুরুর দিকে।  প্রযুক্তির উৎকর্ষে চিঠিপত্র এখন জাদুঘরের উপাদান হলেও একসময় পৃথিবী কাঁপানো মহানায়করাও প্রেমপত্র লিখেছেন।  নেপোলিয়ন বোনাপার্ট খেকে শুরু করে কবি কীটস, চার্চিল থেকে হেন্ড্রিক্সের সে  প্রণয়প্রস্তাব চিরকালই রোমান্সের শ্রেষ্ঠ শিহরণ দিয়ে যাবে।  ব্যক্তিগত বা পেশাগত জীবনে তারা যেমনই হোন না কেন,  তাঁদের রোমান্টিক মন কিন্তু প্রেমিক কবিপুরুষের তুলনায়  কোনো অংশে কম ছিল না।
চার্লি ইয়ামসের ভালোবাসায়  পরিপূর্ণ বিয়ের প্রস্তাব সম্বলিত চিরকুটচার্লি ইয়ামসের, রে ইয়ামসকে দেওয়া বিয়ের প্রস্তাব সম্বলিত চিরকুট
আমি এখন চৌত্রিশের কোঠায় দাঁড়ানো  তোমার মায়াময় রূপের বাঁধনে বুক ভাঙা এক পাগল যুবক।  আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি।  এতটাই উন্মত্ত আমার এ ভালোবাসা।  এখন চূড়ান্ত পরিণতির প্রহর গুনছে ঘর বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে।  আমার এ দরিদ্র ভালোবাসা হয়তো তোমাকে রাজপ্রাসাদের সুখ গড়ে দিতে পারবে না,  তবুও আমৃত্যু চেষ্টা করে যাবে তোমার মুখের হাসি অম্লান, অক্ষত রাখতে।  হে প্রেয়সী, দেবে কি আমাকে সে সুযোগ তোমার অনামিকায় আমার দেওয়া আংটি পরাতে?  তোমার অনামিকা অঙ্গুলির  আংটির মাপই আমার স্বপ্নের উত্তর।
উত্তরের  প্রত্যাশী।
তোমারই  অনেক অনেক ভালোবাসার
চার্লস
 ফেনি ব্রাউনীকে দেওয়া জন কিটসের ভালবাসাময় অপেক্ষার প্রেমপত্র আমার মিষ্টি ভালোবাসাফেনি ব্রাউনীকে লেখা জন কিটসের প্রেমপত্র
আগামীকাল তোমার মোহনীয় মুখখানা দেখার পূর্ব মুহূর্তের প্রতিটি সেকেন্ড যেন এক একটি যুগের অপেক্ষার মতোই ধৈর্য্য পরীক্ষা।
তোমার সৌন্দর্যের আবছায়া যেন আমার অনুভবেই গড়া।  তোমার ভালবাসার আবেশ যেন আমার সমস্ত হৃদয়কেই চুরি করা।
আমার প্রিয় ফেনি
ভালোবাসা রইলো
তোমারই জে. কে.
 ১৮১৯ সালের আগস্ট মাসে তেরেসাকে দেওয়া কবি লর্ড বায়রনের প্রেমপত্রতেরেসাকে দেওয়া কবি লর্ড বায়রনের প্রেমপত্র
প্রেমময়ী,
আমি তোমার মনের বাগানে ঘুরে ঘুরে তোমারই অনুভূতির ডানায় চড়ে বেড়িয়েছি।  কারণ আমি তোমায় ভালোবাসি, আমি বুঝে নিয়েছি তোমার বাগানকোণে আমার প্রতি জমানো তোমার ভালোবাসা।  শুধু মুখের আগল খুলে একবার বল, আমায় ভালোবাসো!  সে কথা শোনার  অপেক্ষার প্রহর গুনছি।
 তোমারই প্রিয় লিও টলস্টয়ের ভেলেরিয়া আরসেনাভকে দেওয়া প্রেমময় চিঠিভেলেরিয়া আরসেনাভকে দেওয়া লিও টলস্টয়ের প্রেমময় চিঠি
 প্রিয়ন্তি,
আমি তোমার সৌন্দর্যে উদ্ভাসিত, বিমোহিত।  আমার এ ভালোবাসা অপার্থিব।  পৃথিবীর কোনো কিছুই টলাতে পারবে না আমার এ ভালোবাসাকে।  পৃথিবীর কোনো কিছুই সহজলভ্য নয়।  সেরূপ তোমার প্রতি আমার প্রেম বন্দনাও আমার সাধনা।
 তোমারই লিও প্রেমিকার উদ্দেশ্যে সুরসম্রাট বেটোফোনের হৃদয় উৎসারিত প্রেমপত্রসুরসম্রাট বেটোফোনের প্রেমপত্র
ভালোবাসা সবকিছুরই দাবীদার ।  সে দাবীর দোহাই রেখেই বলছি-  আমি শুধুই তোমার, আর তুমিও কেবলই আমার।
তোমারই
বেটোফেন বেটোফেনের  আরও একটি প্রেম পত্র ছিল এমন
আমার দেবী,
গভীর দুঃখ আর না পাওয়ার বেদনার মাঝেই যদি থাকে প্রেমের সফলতা,  তবে নিশ্চয় আমাদের প্রেম সফল।  না দেখার কষ্ট, বিরহের যন্ত্রণা ছাড়া আর কিছুই যে নেই তোমার-আমার মাঝে।  প্রতিনিয়ত সুরের মাঝে তোমাকেই খুঁজে বেড়াই।  কিন্তু হায়! অপ্রাপ্তি তো আর প্রাপ্তি হয়ে ধরা দেয় না!  প্রকৃতির সৌন্দর্যের মাঝে আনন্দ খুঁজি।  কিন্তু তোমার ধ্যান, সব দর্শনই মিছে মনে হয় যখন মনে পড়ে দিন শেষে আমরা  রয়ে যাব যে যার মতো নিবাসে।
দেবী,  তুমি কেবল আমারই দেবী,  এই জন্মে না হলেও পরজন্মে মিলন আমাদের হবেই।  এই তো আর কটা দিন অপেক্ষা মাত্র। তুমি সাহসী না হলে,  আমি সাহস করবো কোথা হতে?
ইতি তোমারই
বেটোফেন
 ভালবাসার নায়িকা জোসেফিনকে লেখা নেপোলিয়নের আবেগময় চিঠিনেপোলিয়ন বোনাপার্ট
নেপোলিয়নের মতো তুখোড় যোদ্ধা কি করে একজন অসাধারণ  প্রেমিক হতে পারেন সেটা তার প্রিয়তমা স্ত্রীকে লেখা চিঠি না পড়লে বোঝা অসম্ভব!  তিনি প্রায় ৭৫ হাজার চিঠি লিখেছেন যার বেশির ভাগ ছিল  যুদ্ধের ময়দান থেকেই জোসেফিনকে (পরবর্তীতে তার স্ত্রী) দেওয়া।  একজন যোদ্ধার মনেও যে কি পরিমাণ প্রেম থাকতে পারে তার  প্রতীক বহন করে এই চিঠিগুলো।
 জোসেফিনজোসেফিন ও নেপোলিয়ন
আমার জোসেফিন,
গতকাল সারাটি বিকেল কাটিয়েছি তোমার পোট্রেটের দিকে চেয়ে থেকেই।  কী করে পারো তুমি বলতো এই কঠোর মনের যোদ্ধার চোখেও জল আনতে?  আমার হৃদয় যদি একটি পাত্র হয়,  তবে সেই পাত্রে ধারণ করা পানীয়ের নাম দুঃখ।  তুমি কি তা বোঝো জোসেফিন?  আবার কবে তোমার আমার দেখা হবে?  সে অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হতেই চায় না!  সে অপেক্ষায়…
তোমারই
নেপোলিয়ন বোনাপার্ট
 স্ত্রী  ক্লেমিকে লেখা উইনস্টন চার্চিলের এক প্রেমপত্রচার্চিল
স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে বিয়ের পর প্রেম নাকি উবে যায়।  এ কথাটিকে অসত্য প্রমাণ করেছিলেন উইনস্টন চার্চিল জুটি। তাদের হৃদয় ছিল এক অবিচ্ছিন্ন প্রেমসত্তা।  তারই প্রমাণ মেলে মূলত স্ত্রী ক্লেমিকে লেখা চার্চিলের এক প্রেমপত্রের ছত্রে ছত্রে। আমার প্রিয় ক্লেমি,
আমার মন পড়ে রয়েছে মাদ্রাজের ছোট্ট এক টেবিলে , যেখানে বসে বসে তুমি গত পত্রখানায় লিখেছো যে, আমি নাকি তোমার জীবনকে আলোকিত করেছি। চিঠিখানা পড়ে নির্বাক আমি বসে রইলাম কিছুক্ষণ।  একমাত্র আমিই জানি, তোমার কাছে আমি কতটা ঋণী। আজ আমি যেখানে দাঁড়িয়ে,  তার সবটাই তো তোমারই দান।  কত ঝড় এলো জীবনে। কিন্তু তুমিই আমার শিখিয়েছো কী করে ঝড়ের রাতেও রত্ন কুঁড়াতে হয়।  সব ঝড়ের রাতে কুড়ানো রত্ন জমিয়ে রেখেছি ক্লেমি তোমায় দেবো বলে। কবে আবার দেখা হবে আমাদের?  তোমার স্মৃতি আর ভালবাসা নিয়েই আমার বেঁচে থাকার প্রতিটি নিঃশ্বাস পড়ে। কখনও বদলে যেওনা যেন।
একান্তই তোমার
চার্চিল
 জিমি হ্যান্ড রিক্সের প্রেমপত্র লিটল গার্লজিমি হ্যান্ডরিক্স
পৃথিবীর সমস্ত ভালোবাসা তোমার মাঝেই নিহিত।  তুমি তোমার ভালোবাসার ধারায় সহস্র স্রোতে আরও বিস্তৃত হও।  তুমি ফুটন্ত গোলাপের ন্যায় শুভ্র।
আমি তোমাকেই ভালোবাসি। অনেক অনেক ভালোবাসা।_-----------------letter
জিমি হ্যান্ডরিক্স