Pages

‘ভালো-বাসা’র ব্যবসা

টোকিও: ৩০ পেরোলেই মন উড়ু উড়ু৷ বিয়ের জন্য অস্থির হয়ে পড়েন সকলেই৷ আর এই সুযোগেই জাপানে ব্যবসা বাগিয়ে নেয়ার নতুন তাল খুঁজে পেয়েছে একদল প্রতিষ্ঠান৷ প্রেমের অভিনয় করে প্রতারণার অভিযোগ তাই বেড়েই চলেছে৷

সম্প্রতি প্রেমে ধোঁকা খেয়েছেন অন্তত ১২ জন জাপানি নাগরিক৷ এদের মধ্যে ১০ জনই মহিলা৷ এদের প্রত্যেকেরই বয়স ৩০ থেকে ৪০ এর কোঠায়৷ সবচেয়ে আশ্চর্য বিষয়, এদের প্রত্যেকেরই অভিযোগ একই৷ গপ্পোটা তাহলে খুলেই বলি৷

অনলাইন ডেটিং সাইটে পরিচয় হয়েছিল অচেনা যুবক বা যুবতীর সঙ্গে৷ এরপর বেশ মাখমাখ প্রেম চলেছিল৷ কিন্তু, বিবাহবন্ধনের আগেই প্রেমিক বা প্রেমিকা হঠাৎ বেপাত্তা৷ তবে, কেটে পড়ার আগে এই ভুয়া প্রেম বা প্রেমিকার একটা কাজ করেছেন অত্যন্ত সুকৌশলে৷ প্রেমের ফাঁদে পড়ে প্রত্যেকেই অন্তত আড়াই লক্ষ ডলার মূল্যের একটি করে ফ্ল্যাট কিনেছেন৷ একজন তো প্রেমে এতটাই অন্ধ ছিলেন যে, একবারে তিনটে ফ্ল্যাট কিনে নিয়েছেন৷ তারপরই খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, পলাতক প্রেমিক বা প্রেমিকা কোনো না কোনো রিয়েল এস্টেট এজেন্সির কর্মী৷ প্রেম-ট্রেম কিছুই নয়, আসলে ফ্ল্যাট বিক্রির জন্যই এরা প্রত্যেকে প্রেমের জাল বিস্তার করেছিলেন৷ আর ফ্ল্যাট বিক্রির পরই প্রেমিক বা প্রেমিকাকে ফ্ল্যাটের চাবি ধরিয়ে প্রেমের পাখি ফুরররর…৷ একসঙ্গে থাকার আশায় ফ্ল্যাট কিনে সুখীগৃহকোণ তৈরি আর হলো না৷ তাও যদি তারা বাজার মূল্যে ফ্ল্যাট কিনতেন, তাহলে  প্রতারণার জ্বালা কিছুটা হলেও কমত৷ দেখা গিয়েছে, এদের প্রত্যেকের কাছ থেকেই ফ্ল্যাটের দাম বাজার মূল্যের থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেশি নেয়া হয়েছে৷ প্রতারিত এই ১২ জন  মোট ১৪টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ হিসেবে মোট ১৯ লক্ষ ৫০ হাজার ডলার দাবি করে মামলা ঠুকেছেন৷

জাপানে প্রেমের ছলে প্রতারণার ঘটনা বিগত দু’বছরে দ্রুত হারে বেড়েছে৷ জাপানের জাতীয় উপভোক্তা তথ্য কেন্দ্র জানিয়েছে, ২০১২ সালে এমন অভিযোগে মোট ২৬টি মামলা হয়েছিল৷ আর ২০১৩ সালে  তা গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় ৪২-এ৷স্বাভাবিকভাবেই জাপানে এখন প্রেম প্রেম একটা বড় ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷

No comments:

Post a Comment

আপনার মন্তব্য দিন