Pages

ঈদে অতিথি আপ্যায়নে সহজ কৌশল

অতিথি
ঈদ মানেই ঘরে অতিথির আগমন। আর সেই আগমনকে সুখকর করে তুলতে আপনার প্রয়োজন নিজের রুচি আর পরিবেশকে সুচারুভাবে উপস্থাপন করা। ঈদের বাসায় একসাথে অনেক অতিথি নিমন্ত্রণ করেছেন সেক্ষেত্রে বাড়ি সাজানো থেকে শুরু করে অতিথি অভ্যর্থনা সমস্ত দায়িত্ব আপনার উপর এসে পড়ে। অতিথির সামনে নিজেকে উপস্থাপন যেমন জরুরি তেমনি প্রাধান্য পায় অতিথি আপ্যায়ন তার জন্য রইলো গুরুত্বপুর্ণ কিছু সহজ কৌশল-
১. ঠিকানা
অতিথিকে ফোনে নিমন্ত্রণ জানালে বাড়ির ঠিকানা ভাল করে বুঝিয়ে বলুন যাতে অতিথিদের বাড়ি চিনতে কোনরকম অসুবিধা না হয়। না বুঝলে বাড়ির আশে পাশের সবার পরিচিত দোকানের নাম, রাস্তার নাম উল্লেখ করে দিন।
২. নতুন অতিথি
অতিথিকে আপনি নিজে হাসি মুখে অভ্যর্থনা জানিয়ে ভিতরে আসতে বলুন। পথে কোন সমস্যা হয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করুন। এতে মেহমান আপনার সাথে সহজ হতে পারবে এবং তার কোন সমস্যা হলে নিঃসিঙ্কোচে বলতে পারবে। অতিথি নতুন আসলে পুরো বাসা ঘুরিয়ে দেখান।
৩. বিরক্তবোধ না করা
কোন অতিথি আপনার বাসায় প্রথমবার আসলে বাড়ির ডেকোরেশন নিয়ে নানা প্রশ্ন করতে পারেন, এতে বিরক্ত না হয়ে হাসি মুখে উত্তর দিন।
৪. শোভনীয় নয়
নিজের রুচির চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ করে ঘরের চারপাশের গোছগাছ। অতিথি নতুন আসলে ঘুরিয়ে দেখানোর সময় জিনিসপত্রের দাম নিয়ে আলোচনা করা বা তুলনা করা শোভনীয় দেখায় না।
৫. ধৈর্যশীলতার পরিচয়
কোনও অতিথি ভুলবশত কোন কাঁচের জিনিস যদি ভেঙ্গে ফেলে বা অতিথিদের বাচ্চারা কিছু নষ্ট করে ফেললে বিরক্তি ও রাগ কোনটাই প্রকাশ করবেন না ধৈর্যশীলতার পরিচয় দিন।
৬. উপহার
নতুন অতিথির পছন্দের কোন জিনিস উপহার দিতে পারেন। এতে অতিথির সামনে অতিথিকে পেয়ে আপনার আনন্দের বহিঃপ্রকাশ পাবে। আপনার উৎসবকে করবে আরও আনন্দময়।
৭. ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ
আড্ডায় ব্যক্তিগত প্রসঙ্গগুলো নিয়ে বেশী ঘাঁটাঘাঁটি না করাই ভালো। যখনি বুঝতে পারবেন আপনার অতিথি প্রশ্নের উত্তর দিতে সঙ্কোচ বোধ করছেন, বিষয়টি ওখানেই থামিয়ে দিন।
৮. সংগীত
অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করতে মিউজিকের ব্যবস্থা রাখতে পারেন। সংগীতের হালকা মূর্ছনা এক সপ্নীল পরিবেশ সৃষ্টি করবে। অতিরিক্ত শব্দ যেন প্রতিবেশীর ঘুম হারাম না করে সেইদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
৯. আপ্যায়নের প্রথম ধাপ
অতিথি আসার সাথে সাথে তাকে ফলের জুস, দইয়ের শরবত, কোল্ড ড্রিংকস দিয়ে আপ্যায়ন করতে পারেন।
১০. খাবারের তালিকা
খাবারের তালিকায় বাংলাদেশী খাবার থাকলে তার সঙ্গে চাইনিজ, ইতালিয়ান খাবার মিশিয়ে ফেলবেন না। আমিষ, নিরামিষ দুইটারই সমন্বয় রাখুন। কেননা অনেকে আছেন মাছ মাংসের চেয়ে সবজি বেশি পছন্দ করেন। ভারি খাবারের পর মিষ্টি,দই, ফলমুল,আইসক্রিম এর ব্যবস্থা রাখুন।
১১. অতিথির সংখ্যা
অতিথির সংখ্যা বেশি হলে বিশেষভাবে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করুন। প্রত্যেকে ঠিকঠাক খাচ্ছে কিনা তদারকি করুন। নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী রুচিসম্মত খাবারের ব্যবস্থা করুন। সচরাচর খাবারে বৈচিত্র্য আনতে চেষ্টা করুন।
১২. সুসম্পর্ক গড়তে
আপনার এলাকায় ঘুরে দেখার মতো কোন বিশেষ জায়গা থাকলে আপনার অতিথিকে নিয়ে ঘুরে আসুন। তাতে তারা যেমন আনন্দিত হবে তেমনি আপনারদের মধ্যে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠবে ।
মনে রাখা প্রয়োজন যে একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব ও তার জীবনযাত্রার মান অনুমান করা যায় সে কিভাবে অতিথিকে সমাদর ও আপ্যায়ন করছেন। সবার ঈদ হোক আনন্দময়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন “যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাসী তার কতর্ব্য হল মেহমানকে সম্মান করা।” (বুখারী ও মুসলিম)

No comments:

Post a Comment

আপনার মন্তব্য দিন