Pages

একটি শিরোনামহীন প্রেমের গল্প



*১*
হবু প্রেমিকাকে বললাম ‘তুমি কি আমাকে ভালোবাসো ?’হবু প্রেমিকার কোনো ইতিবাচক ও নেতিবাচক উত্তর আসে না।উত্তর এড়িয়ে নিজেকে নিরবতায় সায় দেই।নিজেকে তখন বুঝ দিলাম যাক বাবা ! শীত কালেও বরফ গলিতেছে ।আবার একদিন বললাম ‘কবে বলবে সেই ঐতিহ্যবাহী বাক্যটি ?’ হবু প্রেমিকার হৃদয়ে আমার প্রতি একটু ভালোবাসা উদয় হলো ।বললো ”কাল কলেজে আসিও তারপর বলবো” হবু প্রেমিকার কথাটি শুনে আমার উন্মাদ হৃদয় আনন্দে আকাশে বাতাসে হাওয়ায় ঢেউ দিয়ে যাচ্ছে।পরদিন সকালে খুব ভোরে উঠে গেলাম।সারা রাত বালিশের এই পাশ আর ওই পাশ করতে করতে গেলো।তবুও আঁখিদ্বয়ে কোনো তন্দ্রাভাব আসে না।সশরীরে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে হবু প্রেমিকার সম্মুখে হাজির হলাম।হবু প্রেমিকা সামনে আসলো ,কিন্তু প্রতিদিনের ন্যায় আজকে সামনে আসার অনুভূতিটাই অন্যরকম। নিজে তখন উত্তেজিত ছিলাম হইত আর কয়েক মুহূর্তের পর হবু প্রেমিকা হবু বউয়ের খেতাবে নাম লিখবে।পরক্ষনে তার চেহারা মোবারক দেখে প্রথমে বুঝতে পারলাম আজকের দিনটা বেশ ভালো নয় ।অনুমান করার ও একটা কারণ আছে মেয়েটি যেদিন মোটা ফ্রেমের চশমা পরে আসবে ঐদিনের মনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসের লক্ষন বেশ সুবিধার না।দুজনে হাঁটতে হাঁটতে রেস্টুরেন্ট এ গিয়ে বসলাম।চোখাচোখি ভাবে বসলাম।আমি বললাম ‘ওগো এই বার বলো না ওই কথাটি’হবু প্রেমিকা কোনো কথা বলে না।ভাবলাম একটু ইতস্তত বোধ করছে সেই,আর কিছুক্ষন প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন তার।আমিও উত্তেজিত ভাবে তার চেহারা মোবারক ভালো ভাবে আয়ত্ত করে নিচ্ছি।কোন জায়গায় তার তিল আছে কোন এঙ্গেলে সেই জাদুময়ী হাসিতে আমার রাগ ভাঙ্গায়।
অতঃপর সেই মেঘ ফেটে মাথার উপর বজ্রপাত ফেলে দিলো।হবু প্রেমিকা অনল স্বরে ”না,বলবো না,কখনো না,ঐ যে যে মেয়েকে নিয়ে স্যানমারে একদিন ডেটিং এ গেলে ঐ মেয়ের সাথে করো,ওই মেয়েকে তুমি লাইক করো,যাও ওই ললনার সাথে পীরিতি করো আমার সাথে নয়”
এক লাইনে সেই সব কথা তিলাওয়াত করে গেলো। ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে তাকিয়ে আছি আমি তার দিকে ভাবতে থাকি এই মেয়ে কি বলে এইসব? দুষ্টমি করে তাকে ক্ষেপানোর জন্য বিভিন্ন মেয়ের গল্প বলতাম আর এই মেয়ে কিনা তা বিশ্বাস করে বসে থাকলো।
হবু প্রেমিকার প্রস্থাবে আমি প্রত্যাখ্যান হয়ে আরে কি হবু প্রেমিকা হবু প্রেমিকা বকতেছি এখনো,হবু প্রেমিকা তো আমাকে নগদে প্রস্তাব আন্তঃফেরত পাটালো।হবু প্রেমিকা এখন ‘প্রেমিকা’ হওয়ার ও আর কোনো সম্ভাবনা নেই আপাদাত ।সদ্য ছ্যাঁক খেয়ে আমি হবু প্রেমিকা উরফে বৃষ্টির উপর রেগে চুপটি মেরে বসে আছি।আমি রাগ করলে আর এই মেয়ে বসে থাকতে পারে না।আমার রাগ ভাঙ্গানোর জন্য কতো আকুতি মিনতি না করে সেই।এইসব দেখে সবসময় ইচ্ছা করে অযথা রাগ করে বসে থাকি।আমার রাগ গুলো খুব একটা ঠেকসয় না।সহজে ভেঙ্গে পরে।অনেক চেষ্টা করি তবুও রাগগুলোকে একটু মজবুত করতে পারি না সচরাচর ।কি জানি এইখানে আমার ব্যর্থতা নাকি সেই আমার রাগ ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে সেই ও ম্যাজিক জেনে গেছে কোন সময় কোন ক্লু টা ব্যাবহার করলে আমার রাগ সহজে ভেঙ্গে যাবে।এইখানে সেই রাগ ভাঙ্গানোর ম্যাজিকে প্রতিভাবান একজন যাদুকরের প্রশংসার দাবিদার । কিন্তু সেইদিন অত সহজে দুর্বল হয়ে পড়িনি তার রাগ ভাঙ্গানো ম্যাজিকে ।আর কোনো কথা না বলে বৃষ্টিকে এড়িয়ে রেস্টুরেন্টের চেয়ার থেকে ঊঠে সোজা বাসে উঠে পড়লাম।প্রতিদিন যাওয়ার সময় হাত নেড়ে টাটা দিয়ে বিদায় দিতাম।কিন্তু আজ টা টা দেওয়া তো দূরে থাক পিছনে ফিরেও তাকায় নি।বাসে বসে বিরহের গান ফ্লে-লিস্টে এনে হেডফোন কানে গুঁজিয়ে দিলাম । চোখে খুব ঘুম আসতেছে তবুও জেগে থাকার প্রচেষ্টা……
*২*
বৃষ্টির সাথে আমার পরিচয় ফেসবুকের মাধ্যমে।পনেরো ষোল মাস আগের কথা চট্টগ্রাম কমার্স কলেজের প্রথম বর্ষের মাঝামাঝি সময়ে ফেসবুকে শুধুমাত্র ফ্রেন্ডলিস্ট এ সংখ্যা নামক ফ্রেন্ড হিসেবে যোগ হয় সেই।কিন্তু কখনো কথা বলতাম না।মাঝে মাঝে নটি আসতো ‘বৃষ্টি’ লাইক ইয়ুর স্ট্যাটাস,ফটো……।তবুও আগ বাড়িয়ে নক করতাম না চ্যাটে।আমরা একই কলেজের স্টুডেন্ট ছিলাম।তবুও পরিচয় হওয়ার কোনো আগ্রহ সৃষ্টি হতো না মনে।কি জানি কোনো এক রকমের ইগো কাজ করত।বৃষ্টির ফেসবুকে ছবি ছিলো।মাঝে মাঝে ওর ছবির মতো হুবহু মিল কলেজে একটা মেয়েকে দেখতাম।চেনার চেষ্টা ও করতাম সবসময়।আগ বাড়িয়ে নিজেই পরিচিত হওয়ার ইচ্ছা জাগত তবুও ভাবজনিত বিশেষণ তখন ক্রিয়া হিসেবে কাজ করায় ইচ্ছাটাকে হত্যা করতাম সবসময়।
এইভাবে প্রায় সাত আট মাস চলে গেলো ।যে মেয়েটিকে আমি বৃষ্টির সাথে কলেজে মিলাতাম সেই মেয়েটি কলেজের ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে আছে।বন্ধুকে ডেকে বললাম ”ওকে চিনিস তুই?” সেই বলে ‘চিনি তবে……। অতঃপর সেই তার নামে কিছু খারাপ কথা বলে।কথা গুলো শুনে খুব খারাপ লাগে । বিশ্বাস হয় না । ফেসবুকে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য নক করলাম ।পরিচয় হলাম ।
হটাৎ করে একদিন বলে ফেললাম ”তোমাকে তো প্রতিদিন কলেজে দেখা যায় চলো না একদিন পরিচিত হয় সরাসরি” ।
তখন বৃষ্টি বলল ”তোমাকে তো আমিও দেখি,হুম দেখা করা যেতে পারে”
আমাকে সেই চিনে বলে আমি কিঞ্চিত অবাক হলাম ।আমি বললাম ”কিভাবে চিনো তুমি আমাকে ?’
”তোমাকে না চিনার কি আছে,কলেজে তো তোমাকে চাঁদ মামা বললে যার ফেসবুক আইডি নাই সেইও চিনবে”
মেয়েটির কথা শুনে হাসি ফেল ।আমাকে চেনাটাও বেস্বাভাবিক কিছু না।কলেজে আবার ফেসবুকের কল্যানে আমার আলাদা একটা পপুলারিটি আছে । কাকতালীয় ভাবে সেই ও সুমন স্যারের কোচিং এ পড়ত। ব্যাচটিও একই ।কলেজ আর কোচিং এর দূরত্ব মাত্র পাঁচ মিনিটের।পরের দিন কোচিং এ তাকে খুঁজছিলাম ।মাথায় আবার বাজ পড়ল।কলেজে এতদিন যে মেয়েটিকে বৃষ্টির সাথে মিলাতাম সেই নয়,কিন্তু ফেসবুকের ছবির সাথে কোচিংএ যে মেয়েটিকে দেখতে ফেলাম তার সাথে প্রায় মিল।এক ছবির সাথে দুই মেয়েকে মিলিয়ে ফেলাতে মাথায় গন্ডগোল লেগে গেলো ।ওইদিন আর তার সামনে যায় নি।তবে মনে মনে একটু স্বস্তিতে ছিলাম যে এতদিন বন্ধুর কাছ থেকে ঐদিন যা শুনেছিলাম তা আসলে বৃষ্টির নামে নয় ।
বৃষ্টি ফেসবুকে মেসেজ করলো
”কি ব্যাপার আজকে দেখেও কথা বলেননি কেনো?”
আমি উত্তর দিলাম ”তোমার ছবির সাথে আমি এতদিন দুই মেয়েকে মিলিয়ে ফেললাম ।সুমন স্যারের কোচিং যে মেয়েটি পড়ে সেই চশমা পরে,কলেজের ক্যাম্পাসে যাকে দেখতাম সেই ব্যাটারী (চশমা) পরে না” ।বৃষ্টির হাসির ইমো দিয়ে বললো
”আরে গাধা যে মেয়েটি চশমা পড়া ওইটাই আমি”
”ওহ !! তাহলে ব্যাটারী গার্লটাই তুমি :P”
”ওই ইডিয়েট ! ব্যাটারী গার্ল ! মানে কি ?”
”না মানে যারা চশমা পরে তাদের কে আমি ব্যাটারী বলি,আলাদা একটি পাওয়ার দিয়ে চলা ফেরা করে তারা …… হি হি হি “
”মেয়েদের মতো হি হি করে হাসো কেনো,হাসবে ছেলেদের মতো করে এইভাবে হা হা হা”
তাকে চিনতে পেরে হতবাক হয়ে গেলাম আমি ।আরে এই মেয়েকে তো প্রতিদিনই কোচিং এ দেখতাম।কতবার যে আমার পিছনে হেঁটে হেঁটে আসতে কলেজে যেতে দেখতাম তার কনো ইয়ত্তা নেই ।এত কাছে থাকার পর ও তাকে চিনতে পারলাম না নিজের গালে নিজেকে থাপ্পড় মারতে ইচ্ছা হয়ছিলো।পরে আবার কি একটা ভেবে মারিনি ।
এরপর থেকে বৃষ্টির সাথে আমার ঘনিষ্টতা বেড়ে যায়।সম্বোধন আমাতে তোমাতে থেকে তুই তুকারিতে চলে আসে ।একসাথে সবসময় দেখা যেত দুজনকে কলেজের ক্যাম্পাসে আড্ডা দিতে,রেস্টুরেন্টে, কোচিং এ।বন্ধু মহলে সবসময় একটা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হতো ‘দুস্ত তোর সাথে বৃষ্টির সম্পর্ক কতদিনের ?কেমন চলে দিনকাল ?’ আমিও সবসময় আমাদের সম্পর্ককে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করতাম।সম্পর্ক বললে ভুল হবে,আমাদের আসলে কিছুই ছিলো না ফ্রেন্ডশিপ ব্যতীত ।তাদের প্রশ্নের উপর রেগে বলতাম ”তার সাথে আমার শুধুই ফ্রেন্ডশিপ আর কিছু না ।আর কিছু যদি শুনে থাকিস তাহলে সেটা অডিও স্ক্যান্ডাল।বুঝিস তো স্ক্যান্ডাল সবসময় ভুয়া হয়”
তুই সম্বোধনে সম্পর্ক বেশিদিন যায় নি । আবার আমাতে তোমাতে হয়ে গেলো।তুই করে আর মুখ দিয়ে কথা আসতো না ।বেস্ট ফ্রেন্ডের মধ্যে প্রেমে পরার এটাই বোধহয় স্বাভাবিক লক্ষন । তবে হ্যাঁ এই স্বাভাবিক লক্ষনের রোগের আবির্ভাব হওয়ার টারনিং পয়েন্ট ছিলো ১২-১২-১২ এই বিশেষ দিনটি। পূর্ববতী রাতে ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম বৃষ্টিকে বারোটি থাপ্পড় মেরে দিন টা শুরু করবো।বিশেষ বান্ধবী মহলে তার কাছে সংবাদ যায় আমি নাকি তাকে এই দিনেই প্রেম নিবেদন করবো।”বান্ধবীর গুজব সংস্থা” থেকে প্রকাশিত তথ্যকে মিথ্যায় পরিণত করে এই মেয়েটির সাথে বারোটা বাজে মার্কেটে দেখা করে কোনো একটা কারণে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ব্রেক-আপ করার হুমকি মূলক বানী শুনিয়ে মার্কেট প্রস্থান করলাম।এরপর বৃষ্টির অনেক কল আসে।আমার আর কোনো রেস্পন্স যায় নি।গ্রামে ফিরে গিয়ে বিভিন্ন মেয়ের রূপের আগুনে জ্বলে পুড়ে ছাড়খার রক্তাক্ত হৃদয়নুভুতি মিশিয়ে ফেসবুকে মহা স্ট্যাটাস দিতাম।বৃষ্টি ব্যতীত পাবলিক কিন্তু এই ধরনের স্ট্যাটাস ই পছন্দ করতো বেশি।আমার একেকটি স্ট্যাটাসে এই মেয়ের হৃদয় ক্ষতবিক্ষত হয়ে যেতো।পরে অবশ্যই জানতে পারলাম এই মেয়ে নাকি এই মৌসুমে আমার প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছে।বারো তারিখের বারোদিন পর আবার আমাদের কথা শুরু হয়।বন্ধু মহলে আমাদের মধ্যকার সম্পর্কের রটনা রটতে রটতে কখন যে আসল ঘটনা ঘটে গেলো সেটা আমরা দুজনেই কেউ টের পায় নি।
*৩*
বৃষ্টির মেসেজে ঘোর কেটে উঠল আমার।মেসেজ ওপেন করে দেখি ”হে বোকা !! তোমাকে ভালোবাসি না বাসি না সেটা নিজ থেকেই বুঝে নিতো পারো না ?সেটা আবার বলতে হয় নাকি ?” মেসেজ পড়ে খুশি হওয়ার বদলে রেগে গেলাম।সামান্য তিনটি শব্দ এটা বলতে এত দ্বিধা কিসের? না এইবার এটা রাগ নয়।এটা অনুরাগ।অনুরাগের আড়ালে অজস্র অভিমান,আবেগ ভালবাসা লুকিয়ে থাকে।বৃষ্টিকে ভালোবাসতে শুরু করলাম।বৃষ্টিও আমাকে ভালোবাসতে শুরু করে।ভালবাসি কথাটি অবশ্যই দশদিন পরেই বললো।
দাঁড়িয়ে আছি প্রতিদিনের পরিচিত রেস্টুরেন্টের সামনে ।ওয়েটার ও বোধহয় আমাদের এই জুটিকে চিনে নিয়েছে ভালো করে।ভাইয়া এদিকে বসেন,আপু চলে আসবে কিছুক্ষন পরে ” ওয়েটার এর কথা শুনে মৃদু হেসে বসে পরলাম চেয়ারে ।অপেক্ষায় আছি বৃষ্টির জন্য।অবশেষে সেই রূপবতী মেয়েটি আসলেই প্রতিক্ষার প্রহর শেষ হয়।আসা মাত্রয় ভাষণ শুরু করে দিলো।আমাদের সম্পর্কে মিষ্টি মিষ্টি প্রেমের কথার বদলে হতো ঝগড়া।সারাক্ষনই ঝগড়া করি।তবে সার্বজনীন সম্পর্কের ছেয়ে এটাই বোধহয় খুব মধুর সম্পর্ক ।ঝগড়ার মধ্যেও আলাদা একটা সুখ টান আছে।ঝগড়া ঝড়ের পর যখন দুজনেই নিস্তব্ধ হয়ে পরি শেষের কয়েকটি কথায় হইতো সারাক্ষন রোমান্টিক কথা বলার চেয়ে বেশি সুখ খুঁজে পেতাম।রেস্টুরেন্টে থেকে বেড়িয়ে এসে হাঁটতে শুরু করলাম।আমি এমনিতেই খুব নিরব স্বভাবের।তাই সর্বদা নিরব থাকার চেষ্টা করি।বৃষ্টিকে যখন জিগ্যেস করলাম আমাকে কেনো ভালোবাসো? তার উত্তর আসে আমার নিরবতায়টাই নাকি তার বেশি লাগে।আবার এই নিরবতায়টা বেশি বিরক্তির হয়ে উঠে মাঝে মাঝে।সেই কথা বলে যায় আর আমি নিরব শ্রোতার মতো শুনে যায় তার স্বপ্ন গুলো,কথার মাঝখানে চিৎকার দিয়ে বলে উঠে ”ফাহিম !কিছু বলো না তুমি !চুপ কেনো ?” আমি তার স্বপ্নের স্রোত থেকে তার ধমকে ঘোর কেটে উঠে বলে উঠতাম হুহ কি বলতেছ? মাঝে মাঝে এই এই স্বভাবের জন্য পিটা খাওয়ার ও উপক্রম হয়ে যেত।সেই বলত আমাদের নাকি একটা খুব সুন্দর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ হবে।আমরা দুজনেই লেখাপড়া শেষ করে ভাল একটা পজিশনে গিয়ে দাঁড়াবো।আমাদের নাকি বিয়ের পর একটা কিউট মেয়েও হবে।আমি হাসতাম মেয়েটা এত সিরিয়াস কেনো ভবিষ্যৎ নিয়ে।অবশ্যই ভালো লাগে সম্পর্কের শুরু থেকে ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা না করলে সেই সম্পর্কের কোনো উদ্দেশ্য থাকে না।বৃষ্টির হাতে একটা প্যাকেট দেখতে পায় শুরু থেকে ।কিন্তু এতক্ষন যাবত আমার ওই প্যাকেটটার দিকে নজর ছিলো না ।বিদায়ের বেলায় আমাকে অবাক করে দিয়ে বললো ” এটা রাখো,তোমার জন্য” আমি বললাম ”এটা কি ?” সেই ক্ষীণ কন্ঠে রেগে বললো ”তোমাকে রাখতে রাখতে বলছি রাখো,এতো কথা কিসের?” আমিও হাতে নিতে না নিতে সেই প্রথমবারের মতো অফিশিয়ালি ভাবে ”I LOVE YOU” তিনটা শব্দ বলে লজ্জা পেয়ে এমন দৌড় দিলো আমি হতবাক হয়ে পড়লাম।আমাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে তাড়াহুড়া করে রিক্সায় উঠে পড়ল । পিছনের পর্দা তুলে আমাকে আবার দেখে সেই।হাত দিয়ে টাটা মেরে বিদায় জানায়।সেই আমার চোখের আড়াল হওয়া সবসময়য় বেদনাদায়ক মুহূর্ত গ্রাস করত মনে ।বুকের বাম পাশে চিনচিনে ব্যাথা বয়ে যায়।একেবারে তো আড়াল হয়ে যাচ্ছে তা তো নয় তবুও কেনো জানি হারিয়ে ফেলার ভয় টা মস্তিষ্কে কাজ করত। আমিও নিস্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে সাঁয় দিতাম।আমি দাঁড়িয়ে থাকতাম যতক্ষন না রিক্সাটা চোখের অগোচর হত না ততক্ষণই………
*৪*
কি জানি বৃষ্টি বোধহয় আমাকে একটু বেশিই ভালবাসে।তবুও আমার কেনো জানি বিশ্বাস হতে মন সায় দেয় না পুরোপুরি ভাবে ।আমার পাশে অন্য মেয়ে আসবে সেটা সেই সহ্য করতে পারে না।সমবয়সী আমাদের পাশের বাসায় একজন তরুনী আসে।সম্পর্ক হওয়ার আগে থেকে এমনিতেই ওর প্রশংসা করে তাকে গল্প শুনাতাম।সেই শুনতে চাই তো না ।আমি বুঝতে চেষ্টা করতাম তার এইসব খারাপ লাগে।সেই নিষেধ করতো মেয়েটির সাথে যেনো আমি কথা না বলি।
মাঝে মাঝে বিভিন্ন মেয়ের গল্প বলে বুঝতে চেষ্টা করতাম সেই আমাকে কত টা ভালোবাসে।কেড়ে নিতাম তার সব আবেগ অনুভুতি।তার ও একটা মহামারি আকারের সমস্যা আছে।সেই কোনো কিছু খুলে বলতে পারতোনা।কিন্তু আকার আকৃতি দিয়ে বুঝিয়ে দিতো সেই আমাকে এটা বলতে চাই।আমিও তার বোবানুভুতিতে হারিয়ে যেতাম মাঝের মধ্যে। কল্পনার জগতে হারিয়ে বৃষ্টিকে নিয়ে মনের স্বপ্নিল ক্যানভাসে ভালোবাসার রংধনুর তুলি দিয়ে নিজের মতো করে সাজিয়ে আঁকতাম তাঁকে ।আঁকা ছবিটা অপলক নয়নে চেয়ে থাকতাম বারবার।মনের ভিতর থেকে যখন সাড়া না পায় তাহলে মুছে আবার আঁকা শুরু করি যেনো আমার জানপাখিটাকে মোনালিসার ছবিটাও হার মানায় ।সেই আমার এলারম ঘড়ি হয়ে কাজ করত ।প্রতিদিন ভোরে ডেকে দিতো খুব আদর করে পড়ার টেবিলে বসার জন্য ।আর আমি উঠতে চাইতাম না ।সেই তখন আমার শাসক হিসেবে পরিণত হতো।এমন হুমকি দিতো যে তখন না উঠে পারতাম না ।রাতে যে কণ্ঠনালীর সুর শুনে ঘুমাতে যেতাম আবার সেই সুরে দিন শুরু করতাম ।সারাটা দিন ফুর্তিতে থাকতাম ।আমাদের দুজনের প্রায় মিলে যায় ।আমরা মনে করি দুই দেহে এক আত্মা বসবাস করি ।আমি কোনো কিছু বলার আগে সেই বুঝে নিতো যে আমি তাকে এটা বলতে চাই ।তখন চাওয়া থেকে পাওয়ার সীমানা এতটাই বেড়ে যেতো নিভৃত গহীন চিত্ত থেকে মাঝে মাঝে কয়েকটা প্রশ্ন এসে ধাক্কা খেয়ে যায় বিবেকে ”ভালোবাসা এতো মধুর কেনো ?জীবনটা এতো সুন্দর কেনো”?উপলব্ধি করতাম জীবনটা অনেক মধুময়ী সুন্দর,এই মধুময়ী সুন্দরকে খুঁজে পেতাম না যদি না বৃষ্টির মতো প্রেয়সী আমার মনের ভাগ বসাতে না আসতো ।
*৫*
”এই কয় তুমি ?”
”এই ত বাসায়,আসতেছি ”
”তাড়াতাড়ি আসো,আজকের দিনেও দেরি হলে খবর আছে তোমার”
বৃষ্টির হুমকি শুনে বাসা থেকে বাহির হয়েছি।ভ্যালেন্টাইন্স ডে এর কার্ড,গিফট আর যাওয়ার সময় নার্সারি থেকে তাজা কয়েকটি গোলাপ নিয়ে হাজির হয়েছি তার সামনে । হাতে এইসব নিয়ে নিজেকে তখন সিনেমার হিরো হিরো লাগছিলো আবার লজ্জা ও লাগছিলো কিভাবে যে আমার নায়িকাকে দিবো । আমাদের প্রথম ভ্যালেন্টাইন্স ডে উদযাপন করতে যাচ্ছি।সাধারণত মনের মধ্যে রোমান্টিক ছোঁয়া লাগারই কথা।তার সামনে গিয়ে হাজির হলাম ।দুজনেই রিক্সাতে তে উঠে পড়ি ।বৃষ্টিকে এত কথা বলি একটু সাজগোজ করে আমার সামনে হাজির হতে।সেই আমার কথা কখনো শুনে না।সেই তার মতোই সাধারণ মেয়ের মত আমার সামনে হাজির হয় সবসময়।এমনিতেই অনেক সুন্দর আধুনিকতার ছোঁয়ায় তাকে একটু সেজে আসলে দেখতে কি রকম লাগবে সেটা দেখার ইচ্ছাটাই সবসময় কাতর হয়ে থাকত ।তবে ইচ্ছাটায় আজকে পুরণ হলো।তাকে আজ দেখতে পরীর মতোই লাগছিলো ।
” এই হাবলার মতো এক পাশে গিয়ে বসে আছো কেনো ? রিকশা থেকে পরে গেলে কেমন হবে ? ” রিক্সা বসা অবস্থায় বৃষ্টি বললে ঘোর কাটে আমার ।
” হুহু !! কি বলছো ”
”হুহু কি ? আরো এদিকে এসে বসো ”
দুজনে রিকশায় বসে আছি ।প্রথম বারের মতো একসাথে রিক্সা বসা ।অনুভুতিটা একটু ভীতু টাইপের রোমান্টিক।সূর্য প্রায় পশ্চিম দিকে তখন।সোনালি রক্তিম আভা তার চেহারায় কিরণ দিলেই আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠে সেই মায়াবতী মুখটি ।জ্বল জ্বল করে করে জলতে থাকে তার রূপের একেকটি নক্ষত্র ।ফাল্গুন এসেছে আর আমার গহীনে আগুন জ্বলছে ধাও ধাও করে।পাখির কলরব ও শুনা যায় ।দখিনা বাতাসে তার চুল গুলো এলোমেলো ভাবে শিকল ছেঁড়ে উড়ছে আর আমার মুখে এসে ধাক্কা খেয়ে আবার গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছে ।তার একেকটি ধারালো মসৃণ চুল আমার অনুভুতিকে খুব জোরে আগাত করছে ।রিক্সা থেকে নেমে গন্তব্যে পৌঁছলে বৃষ্টিকে বলি চলো হাটি ।যে জায়গায় বেড়াতে গেলাম অনেক কপোত কপোতীদের দেখা যাচ্ছে ।ভালবাসা দিবস বলে কথা।তাদের দেখাদেখি দেখে আমিও বৃষ্টির হাত ধরে হাঁটতে লাগলাম।।প্রথম বারের মতো তার হাত ধরা অনুভূতিটা অন্যরকম।সারাজীবন সেই হাত ধরে স্বপ্ন যাত্রার অনুপ্রেরণা খুঁজে পাচ্ছিলাম মনে মনে ।একটা গাছের নিচে গিয়ে বেঞ্চিতে দুজনে বসি চোখাচোখি হয়ে।সেই গম্ভীর হয়ে বসে আছে ।হঠাত করে সেই চুপচাপ হয়ে গেলো ।হইত সেইও আমার মতো তার অনুভুতি জন্ম দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে । ব্যাগে অনেক গুলো গোলাপ নিয়ে এসেছি কিভাবে দিবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না । তার নিরবতা কখনো আমার চোখে ধরা পড়ে নি,কি জানি আজকে কি হলো তার ।গতকাল রাতে সামান্য একটা ব্যাপারে কথা কাটাকাটি হয়ে ছিলো এই নিয়ে আবার আমার উপর রাগ করে বসে আছে নাতো? এইসব ভাবতে ভাবতে ব্যাগ থেকে গোলাপ গুলো বের করে তার হাতে দিলাম । ওমা সেই দেখি ফুল গুলো নেয় না ।
আমি আকুতি স্বরে বলে উঠলাম
”ম্যাম ফুল গুলো কি নিবেন?”
”জি না স্যার ”
”কেনো ম্যাম ?কি অপরাধ তা কি জানবার অধিকার রাখি ?”
”এইভাবে কি কেউ ফুল দেই ?”
” তো ম্যাম কি ভাবে দেই ?”
”কিভাবে দেই তা জানো না ,একটু রোমান্টিক মুডে দিবে,হাটু ভেঙ্গে এক পা মাটিতে ঠেস দিয়ে নতুন করে আবার প্রপোজ করো”
বুঝছি তাদের মস্তিষ্কে হিন্দি সিরিয়ালের ভাইরাস আছে ।তার কথা শুনে মাথার চুলে আগুন লাগার অবস্থা আমার ।আরে এই কি সত্যি সিরিয়াসলি বলছে নাকি । মনে তো হয় । আমি বলে উঠলাম
”আচ্ছা সেই স্টাইলে যদি তোমাকে ফুল গুলো দিতে যায় তখন এই কথাটি অবশ্যই বলতে হবে ” Will you marry me ?” তখন তার উত্তর কি আসবে আপনার থেকে”
বৃষ্টি মুচকি হেসে বললো ”আগে করে দেখাও না,তারপর কি বলি দ্যাখো”
আশেপাশের মানুষ দেখে আমি লজ্জায় পরে গেলাম । ”আচ্ছা থাক এই অধ্যায়টা আপাদত কিছুক্ষনের জন্য স্থগিত রাখি”
”তাহলে একটা গান শুনাও,তুমি বলছিলে না আজকে আমাকে গান শুনাবে”
আমি আরো হতবাক হয়ে পড়লাম ”এই কি এ মেয়ে কি বলে”
ব্যাগ থেকে আংটি টা বের করে তার হাত ধরে পরিয়ে দিলাম।সেই হা করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে ।আমি বললাম ”তোমাকে আংটি পড়িয়ে দিয়ে আমার বউ করে ফেললাম’ সেই হেসে বলে ”আংটি পরিয়ে দিলে বউ হয়ে যায় নাকি” আমি বললাম ”না,,তা তো না,তবে বউ হওয়ার আরো এক ধাপ এগিয়ে গেলে”।সেই আমার কথা শুনে মৃদু হেসে অভিযোগ তুলে বলে ‘তুমি এত রোমান্টিক ক্যানো ?”
লেখালেখির প্রতি যাদের বেশি ঝোঁক তারা রোমান্টিক হবে তা তো স্বাভাবিক।সব মেয়েরা চাই তার প্রিয়তম মানুষটি রোমান্টিক হউক।অনেক সুন্দর সুন্দর আবেগী কথা শুনাবে ,কবিতা আবৃতি করে শুনাবে ।কিন্তু আমার টা সবসময় অভিযোগ করে ”আমি এত ওভার রোমান্টিক ক্যানো?”
”গান তো এখনো শুনাও নি” বৃষ্টি বলে উঠল।
এই অধ্যায়টা ভুলানোর জন্য এতক্ষণ এত নাটক করলাম তবুও দেখি এই মেয়ে এটা ভুলতে পারে নি।
আশেপাশের গাছগাছালির দিকে তাকিয়ে বললাম ”দ্যাখো বৃষ্টি,দ্যাখো , এইখানে কতোগুলো কাক কত আরাম করে বসে আছে ,আমি যদি বেসুরে গলায় পাটা বাঁশ নিয়ে গান ধরি নিশ্চিত এই কাক গুলা এইখানে আর থাকবে না,উড়ে চলে যাবে বহুদূর ।কেউ বা আবার আত্মহত্যা করার মতো এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে থাকবে ।পিলিজ তুমি শুনাও তারপর আমি শুনাবো ”
বৃষ্টির গলা খুব ভালো । এই মেয়ের গানের সুর এত ভালো হবু প্রেমিকা থাকাকালীন অবস্থায় জানা ছিলো না আমার।একদিন গানের প্রসঙ্গে এসে গান গাওয়ার কথাটি এসে ।মনটা আমার ভীষণ খারাপ ছিলো তখন তাকে একটা গান শুনাতে বললাম।সেই ও শুনালো।শুনার আগে শর্ত দিলো গান কখনো রেকর্ড করা যাবে না ।সেই থেকে প্রতিদিনই আমাকে একটা একটা করে গান শুনায়।মুলত আমি যখন রাগ করি সেই এই গানকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ।একটা গান শুনিয়ে দিয়ে নিমিষেই আমার রাগ ভেঙ্গে ফেলত ।মনটাও অনেক ভালো হয়ে যেতো । বৃষ্টি গান ধরল ।আর আমি অপলক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছি ।কি এক অদৃশ্য মায়াবীলতা গ্রাস করে তার চেহারায় ।নিজেকে ধন্য মনে হয় মাঝে মাঝে তার মতো রমনীয় মেয়ে আমাকে এতটাই ভালোবাসে ।এতকিছু ভাবতে ভাবতে তার গান শেষ হলে ঘোর কাটে আমার ।
”এইবার তুমি শুনাও”
নিজের পালা এসেছে, শুনাতে হবে ।নাহলে এই মেয়ে আবার ঘোমড়া মুখ করে বসে থাকবে ।মোবাইলের মিডল বাটনটা ক্লিক করলাম।আর সাউন্ড বক্স দিয়ে বাহির হয়ে বৃষ্টির শ্রবণে ইনফুট হচ্ছে এই মুহূর্তে বৃষ্টি যে গানটি গেয়েছে তার কণ্ঠের অনুলিপি । বৃষ্টি চিৎকার দিয়ে অগ্নি সুরে বলে উঠল ”ফাহিম ! তুমি আমার গান রেকর্ড করছো,ডিলেট করো এখনি” ।সেই রেগে একেবারে হিটার।আমার পিঠে কয়েকটি কিল ও বসিয়ে দিলো ইতিমধ্যে ।মেয়েদের হাতের পিঠা যেমন মজা ঠিক তেমনি পিটাতেও এক ধরণের সুখ আছে তা ওই দিনেই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি।রেগে চোখ গুলো ডিমের মতো করে রাখছে আর চোখ দিয়ে অগ্নি বৃষ্টি ঝড়ে পড়ছিলো । আমি তার চোখের দিকে তাকিয়ে আছি আর বলছি ”রাগলে তোমাকে এতটা সুন্দর লাগবে তা তো আগে জানা ছিলো না,পিলিজ তুমি আরো চিৎকার করে চেঁচামেচি করো” আমার রসিকতা শুনে সেই আরো হিট হয়ে গেলো ।মোবাইলটা হাত থেকে কেড়ে নেওয়ার জন্য কাড়াকাড়ি করছিলো আর আমি আশেপাশে মানুষের দিকে তাকালাম দেখছি কেউ আমাদের দিকে তাকাচ্ছে না সেই সুযোগে তার কপালে চুমু খেয়ে ফেললাম ।
অতঃপর !! কি আর হবে ! সকল বৃষ্টি,ঝড়,তুপান,বন্যা থেমে গেলো ।পড়ন্ত বিকেল একদম নিস্তব্ধ হয়ে পড়ল ।সেই লজ্জা পেয়ে দু হাতে চোখ জোড়াকে ঢেকে রেখে আড় চোখে আমার দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসছিলো । লজ্জা পেয়ে জিহ্বায় জিব ও কেটে বসলো ।লজ্জায় নারীর ভূষণ ।লজ্জা পাওয়াটাই স্বাভাবিক । চুমু যদি হয় মেয়েদের অগ্নি মুহূর্ত থামানোর অন্যতম হাতিয়ার তাহলে ওইটাই ব্যবহার করা উচিত সকল প্রেমিক দের।

No comments:

Post a Comment

আপনার মন্তব্য দিন