Pages

কর্মস্থলে আত্মবিশ্বাসী হওয়ার ১২টি কৌশল


কর্মস্থলে আত্মবিশ্বাসী হওয়ার ১২টি কৌশল





কর্মক্ষেত্রে নিজের অবস্থানকে শক্ত করতে অবশ্যই কিছু কৌশল মেনে চলতে হবে। হতে পারে অনেক বেশি সময় ও কর্ম দক্ষতা দেখিয়েও আপনি খুশি করতে পারছেন না আপনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে।এই প্রতিযোগিতাময় সময়ে মেধার পাশাপাশি প্রয়োজন মনোবল। হয়তো কর্তৃপক্ষকে বদলানো সম্ভব নয়, কিন্তু আপনি নিজের দৃষ্টিভঙ্গিকে বদলে নিন খানিকটা।তাই এই বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন মাইকেল কেরিগ্যন নামের একজন গবেষক।

তবে জেনে নিই তার  কৌশলগুলো:১) নিজেকে আত্মবিশ্বাসী হিসেবে উপস্থাপন করুনঃ স্মার্ট পোষাক, পরিচ্ছন্নতা, হালকা সুগন্ধী আপনার স্মার্টনেস কেবল অন্যের চোখেই না আপনার নিজের চোখেও নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। সকালে অফিসে যাবার আগে ১০ মিনিট বেশি ব্যয় করুন নিজের পেছনে। দেখবেন, সারাদিন নিজেকে প্রেজেন্টেবল আর আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছে।

 ২) অঙ্গভঙ্গীতে আত্মবিশ্বাসী ভাব ফুটিয়ে তুলুনঃ মেরুদণ্ড সোজা ও মাথা উচু করে হাঁটুন। মাথা নিচু করে কুজো হয়ে হাঁটবেন না। এতে আপনার ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে অন্যদের ধারণা খারাপ হবে।

৩) সহকর্মী বা বসের নেতিবাচক কথা মনে ধরে রাখবেন না। একটি প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ কেউ প্রশংসা করে আবার কেউ ভুল ধরিয়ে দিয়ে কাজ আদায় করতে চেষ্টা করেন। বুঝতে চেষ্টা করুণ আপনার বসের মানসিকতা কেমন।হয়তো তিনি আপনার সম্পর্কে নানা নেতিবাচক কথা বলছেন আপনার কাছ থেকে তার প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ আদায় করতে। আর সেটা কি আপনার যোগ্যতার কারণেই নয়? চেষ্টা করুন নিজের ভুলগুলো শুধরে নেবার।

আবার সহকর্মীরা হয়তো অনেক সময় আপনার নামে নেতিবাচক কথা বলে থাকে, আপনার কাজের দক্ষতাকে ঈর্ষা করে বলেই এমনটা হয়!

৪) কথা বলুন চোখে চোখ রেখেঃ যখনই কারো সাথে কথা বলবেন তার চোখে চোখ রেখে কথা বলুন, কথা বলার সময় এদিক ওদিক তাকাবেন না বা অন্য কিছু করবেন না। এটি আত্মবিশ্বাসী হবার একটি অন্যতম চিহ্ন।

৫) মনোযোগ দিয়ে শুনুন, তারপর বলুনঃ কেউ যাখন আপনার সাথে কথা বলছেন তখন তার কথার মাঝখানে কথা বলবেন না বা প্রশ্ন করবেন না। আগে শুনুন। এতে তিনি ভাববেন আপনি তাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন এবং তখন তিনিও আপনার কথা শুনতে আগ্রহী হবেন। কেউ যখন আপনার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

৬) নিজের ব্যাপারে নেতিবাচক কথা বলবেন নাঃ আমি খুব অগোছালো, ডেডলাইন ছুঁতে পারি না, ধীরে কাজ করি, অন্যদের মত ভালো প্রেজেন্টেশন করতে পারি না, ইত্যাদি নিজের নেতিবাচক দিকগুলো কখনোই কর্মস্থলে বলতে যাবেন না। নিজের ইতিবাচক দিকগুলো বলুন, এতে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে আবার সহকর্মী বা বসের কাছেও আপনি গ্রহণযোগ্যতা পাবেন।

৭) মানুষজনের সাথে মিশুন ও নেটওয়ার্ক বাড়ানঃ পরিচিতির গণ্ডি বাড়ানোর পাশাপাশি এটি আপনার মানুষের সাথে যোগাযোগ স্থাপন, ব্যক্তিত্ব ও জ্ঞানের পরিধি বাড়াবে। আশেপাশে মানুষের একটি বড় বৃত্তে আপনি অনেক বেশি নিরাপদ ও আত্মবিশ্বাসী বোধ করবেন।

৮) নিজের প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তিগুলো লিখে ফেলুনঃ মানুষজনের কথায় কেবল নিজের অপ্রাপ্তি নিয়ে হতাশায় ভুগবেন না। বরং ভাবুন নিজের প্রাপ্তিগুলো নিয়েও। লিখে ফেলুন একটি ডায়েরিতে আগামীর লক্ষ্যও। দেখবেন হারানোর চেয়ে অর্জন আর সম্ভাবনায়ই ভরে উঠেছে আপনার খাতা ও মন।

৯) আগ্রহের জায়গায় দক্ষতা বাড়ানঃ ভাষা, পড়াশোনা বা প্রযুক্তি, যেখানেই আপনার আগ্রহ থাকুক না কেন, দক্ষতা বাড়ান, আপনার পেশাদারী আত্মবিশ্বাসে একটি নতুন পালক যুক্ত হবে, সন্দেহ নেই।

১০) অন্যদের সাহায্য করুনঃ যতটা সম্ভব অন্যদের সাহায্য করুন। সমাজসেবা জাতীয় সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকুন। অন্যের উপকার করার মধ্য দিয়ে আপনি নিজের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে উঠবেন। নিজেকে নিজে বড় ভাবতে না পারলে আপনার আত্মবিশ্বাস কখনোই বাড়বে না।

১১) ক্ষতিকর মানুষদের সঙ্গ ত্যাগ করুনঃ যারা কেবল আপনার সম্পর্কে নেতিবাচক কথাই বলে ও সুযোগ পেলে আপনার ক্ষতি করতেও দ্বিধা করবে না, হোক বন্ধু বা সহকর্মী, এদের কাছ থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখুন। আপনার কনফিডেন্স লেভেল কমাতে এদের জুড়ি নেই।

১২) সাফল্য প্রত্যাশা করুন, ততটুকুই কাজ নিন, যতটা শেষ করতে পারবেনঃ নিজেকে দায়িত্বশীল প্রমাণ করতে গিয়ে অতিরিক্ত কাজ কাঁধে নিয়ে ভালোভাবে না করতে পারলে সেই ব্যর্থতা আপনার আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেবে। এর চেয়ে যতটুকু সম্ভব ততটুকু কাজ আর ভালো দক্ষতাকে মূলমন্ত্র করেই সফলতার দিকে এগিয়ে যান।

আপনি জন্মেছিলেন আত্মবিশ্বাস নিয়েই, হয়তো নানা কারণে তা কমে যাচ্ছে। কিন্তু আপনিই পারেন আপনার হারানো আত্মবিশ্বাসকে ফিরিয়ে আনতে।

No comments:

Post a Comment

আপনার মন্তব্য দিন