Pages

১৪ই ফেব্রুয়ারী

                                             অমিলন ভালোবাসা 
সুন্দর চেহারার একটা মেয়ে কি মিষ্টি করেই না আইসক্রিম খাচ্ছে!

যতক্ষন ছিলাম কে এফ সি তে তাকিয়ে ছিলাম তার দিকে।।এতো মিষ্টি একটা মেয়ে!মন ছুঁয়ে গেলো আমার।।প্রথম দেখাতেই স্বপ্নের প্রজাপতিকে ভালো লেগে গেলো।।ভাবলাম কথা বলব মেয়েটার সাথে।মনে ভয় পাচ্ছিলাম।।মেয়েটার সাথে ওর আরো দুজন বন্ধু ছিলো।।আমি মেয়েটার সামনে গিয়ে বললাম,Excuse me,কথা বলতে পারি আপনার সাথে?মেয়েটা বলল বলুন।
আপনাকে আমি খুব লাইক করি।।আপনার সাথে frndship করতে চাই আমি।।মেয়েটা খুবই অবাক হলো।।তারপর মেয়েটা বললো এভাবে তো frndship করা যায় না।আপনাকে চিনি না জানি না!কিভাবে!




আমি বললাম কথা বলতে বলতে পরিচিত হয়ে যাবো।।মেয়েটা বলল, আচ্ছা।।
তারপর ওর আইসক্রিম খাওয়া পর্যন্ত কথা বললাম আমরা।।সুযোগ বুঝে নাম্বার টা চেয়ে নেই আমি।।

এরপর কিছুদিন কথা হয় আমার সাথে তার।।আমার ভালো লাগা টা ভালোবাসায় পরিনত হলো।খুব ভয় পাচ্ছিলাম আমি।।যদি ও মেনে না নেয়।।একদিন সে আমাকে কে এফ সি তে আসতে বলে,আমার আসতে দেরি হয় আর ও চলে যায়।খুব খারাপ লাগে সেদিন।।ও ফোন ধরছিলো না।।যাই হোক রাতে কথা হয় ওর সাথে,ও আমাকে যে কথা শোনালো তাতে আমার হার্টবির্ট বেড়ে গেলো।।সে বললো "She loves me"




আমি চুপ হয়ে গেলাম।।কথা হলো কে এফ সি তে কাল দেখা করব।পরদিন আমরা দেখা করলাম।।তার মিষ্টি চোখের কাজঁল আমাকে তার দিকে বার বার টেনে নিয়ে যাচ্ছিলো।।আমি নিজেকে সামলাতে পারছিলাম না।।ওর হাত দুটো ধরলাম আমি।।তারপর বললাম,আমাকে ছেড়ে যেও না ঐশী কোনদিন।।প্লিজ।।

ও বললো যদি কখনো যাই তোমাকে সাথে নিয়ে যাবে,আমার সাথে,যাবে তো!!

তিনটি বছর কেটে যায়।।খুব ঘুরতে পছন্দ করত সে।।কফি আর বার্গার ছিলো তার খুব পছন্দের।।ক্যাটবেরি খেতো প্রচুর।।তবে আমি তাকে বার বার বলতাম,ঐশী আইসক্রিম টা খাও,কত মিষ্টি লাগতো যখন ও খেত!উফ!বুকে এসে লাগে।।

ওর বাসা ছিলো ধানমন্ডিতে। 10 e পড়ে।।আর আমি থাকতাম বনশ্রী।।A level দিয়েছি।।খুব ভালো একসময় আমরা কাটাই তখন।।কত খুশি কত আনন্দ!
এই ১৪ই ফেব্রুয়ারী তে ওকে আমি আংটি পড়াই।।আর একটা ছোট্ট গিফট দেই ওকে।।একটা নতুন মোবাইল ফোন।।খুব খুশি হয় সে।।আনন্দে জড়িয়ে ধরেছিলো আমাকে।।সেই দিন থেকে সে আমার কাছে থেকে হারিয়ে লাগলো।।




ভার্সিটিতে ভর্তি হই আমি।।আমার সম্পর্কটা আরো সুন্দর হচ্ছিলো।।১ম সেমিষ্টারে ফেল করি।।নিজের কাছে খুব খারাপ লাগে,কখনো ফেল করি নি আমি।।নতুন ভাবে লেখাপড়া শুরু করি আমি।।লেখাপড়ার চাপের কারনে ফোনে কথা কমিয়ে দেই আমি।।

ও ভাবত আমি এখন আর ভালোবাসি না ওকে,আস্তে আস্তে বড় একটা Gap হয়ে যাচ্ছিলো আমাদের মাঝে।।সে ভাবে আমি এখন বোধ হয় অন্য কাউকে ভালোবাসি।।সামান্য একটা ঘটনার কারনে ভেঙ্গে যায় আমার স্বপ্ন।।হারিয়ে যায় স্বপ্নের প্রজাপতি।।

brk up হবার দিন ও আমাকে আমার গিফট গুলো আর ফোন টা ফেরত দেয়।।আমার হাত কাপঁছিলো।।যাই হোক দুদিন পর ই ঐশী আমাকে ফোন দেয় বলে দেখা করতে চায় আমার সাথে।।ও থাকতে পারছিলো না তাই।।আমি বললাম কে এফ সি তে এসো আমি অপেক্ষা করব।।পরদিন আমি আগেই পৌছে গেলাম।।ও ফোন করে জানালো ও বাসা থেকে রেরিয়ে রিক্সায় উঠেছে।।দু ঘন্টা পার হয়ে যায়।ও আসে না।।ফোন করে দেখি ফোন বন্ধ।।




আমি খুব অস্থির হয়ে ছটফট করতে থাকি।।পাগলের মত ওকে ফোন দিতে থাকি।।ওর বাসার নিচে যাই।।রাস্তা থেকে ওর রুমের বারান্দা দেখা যেত।।সন্ধ্যা হয়ে গেছে তবুও ওর রুম অন্ধকার।।বুকের মাঝে কি এক শূন্যতা!আমার সব কিছু কে গ্রাস করছিলো,মনে হচ্ছিলো কি যেন হারিয়ে যাচ্ছে আমার থেকে।।আমি আমার বাসায় চলে আসি।।রাতেও ফোন বন্ধ,ঘুম হয় না।।খেতে পারি না।।নামায পড়লাম অনেকদিন পর।।স্রষ্টাকে খুব ডাকতে ইচ্ছে হচ্ছিলো।




যাইহোক সকাল দশটায় ওর বাসার সামনে উপস্থিত হই।।দেখি বাড়ির সামনে অনেক মানুষ।।একজন কে জিগ্যেস করলাম কি হয়েছে এখানে!লোকটা বললো আমাকে এই বাড়ির চারতলার একটা মেয়ে রোড একসিডেন্টে মারা গেছে।।আমি হতভম্ব।।ওর লাশের কাছে যাই।।সারা দেহ সাদা কাফনে আব্ত।খালি মুখ টা দেখা যাচ্ছে।।কি পবিত্র দেখাচ্ছিল মুখটা।।ওর পাশে ওর বান্ধবীরা ছিলো।।কাদঁতে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।।ওরা আমাকে ধরে বসালো।।আমি আমাকে হারিয়ে ফেলি সেদিন থেকে।।




ওর সাথে কাটানো সময় গুলো মনে পড়লে অশ্রু হয়ে বারে বার ওর কবরের সাথে নিজেকে মিশিয়ে দিতে ইচ্ছে করে।।
এখনো তোমাকে খুব মনে পড়ে।।রাতে ঘুমুতে পারি না,তোমার ছবিগুলোর দিকে চোখ পড়লে চোখ ভিজে উঠে সহসায়।।আজ ও ভুলতে পারি নি তোমাকে.......    

No comments:

Post a Comment

আপনার মন্তব্য দিন